গম রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা হতাশাজনক

ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য দুঃখজনক। ভারতীয় গমের একক বৃহত্তম আমদানিকারক বাংলাদেশ। এ ছাড়া, গম বাংলাদেশে দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত খাদ্যশস্য। ইতোমধ্যে দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি চলছে এর সংকট, যদিও এর কিছুটা কৃত্রিমভাবে তৈরি। কিন্তু এরমধ্যেই এখন গম কিনতেও বাড়তি দাম দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।

ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য দুঃখজনক। ভারতীয় গমের একক বৃহত্তম আমদানিকারক বাংলাদেশ। এ ছাড়া, গম বাংলাদেশে দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত খাদ্যশস্য। ইতোমধ্যে দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি চলছে এর সংকট, যদিও এর কিছুটা কৃত্রিমভাবে তৈরি। কিন্তু এরমধ্যেই এখন গম কিনতেও বাড়তি দাম দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।

সব মিলিয়ে বিষয়টি উদ্বেগের। ভারত গত ১৪ মে রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিতে না দিতেই চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে গমের দাম ২৫ শতাংশের মতো বেড়ে গেছে।

এর আগে, অর্থনীতিবিদরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বিশ্ব অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক দেশ। আগ্রাসনের কারণে দেশটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হচ্ছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন বিশ্বের ৬ শতাংশ গম উৎপাদন করে। এ যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে গমের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম গম উৎপাদনকারী দেশ চীনে এ বছর উৎপাদন ভালো হয়নি। ভারতেও মারাত্মক খরা ছিল। করোনা মহামারি এবং জ্বালানি ও খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে বিশ্বজুড়ে সাপ্লাই চেইনও অনেকটা চাপের মুখে।

যাই হোক, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ভারতের বাণিজ্য সচিবের একটি আশ্বাসে আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেছেন যে, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই প্রতিবেশী এবং দরিদ্র দেশগুলো বিশেষ সুবিধা পাবে।

ভারত থেকে আমরা আমাদের চাহিদার ৮০ শতাংশের বেশি গম আমদানি করি। বাংলাদেশ সরকারের উচিত গম আমদানির জন্য সরকারি পর্যায়ে চুক্তি করতে এখনই ভারতের সঙ্গে বসা। ইতোমধ্যে যে পরিমাণ গম আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) ইস্যু হয়েছে, ভারতকে সেই পরিমাণ গমের চালান নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো উচিত।

আরেকটি আশার আলো হচ্ছে, আমাদের এখানে গম কাটার সময় হয়ে গেছে এবং মে মাসের শেষ দিকে তা বাজারে আসবে। তবে এরমধ্যে প্রশাসনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো দাম বেড়ে যাওয়ার আতঙ্কে ক্রেতাদের আগেই বাজার থেকে ইচ্ছেমতো আটা-ময়দা কেনা ঠেকানো।

তার চেয়েও বড় কথা, ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকটের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে শিগগির গম মজুদ বা বেশি দামে বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো শুরু করা উচিত সরকারের। এ ক্ষেত্রে নতুন আইন প্রণয়ন করার কথাও ভাবা যেতে পারে, যে আইনের মাধ্যমে জরুরি খাদ্যপণ্য মজুদ করাকে গুরুতর শাস্তিমূলক অপরাধ বিবেচনা করে মজুদদারদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।

Comments