‘মুনিমকে পিক করার এখনই সময়’

এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে জাতীয় দলের জন্য এখনই পিক করার আদর্শ সময় মনে করছেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
Munim Shahriar
দারুণ ইনিংসের পথে মুনিম শাহরিয়ারের শট। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিপিএলে প্রথম সুযোগে করেছিলেন ১ রান, ফাইনালে করতে পারেননি কোন রান। কিন্তু মাঝের চার ম্যাচে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের দ্যুতিতে আলো ছড়িয়েছেন মুনিম শাহরিয়ার। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ওপেনিং সংকটে দেখিয়েছেন আশার আলো। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে জাতীয় দলের জন্য এখনই পিক করার আদর্শ সময় মনে করছেন খালেদ মাহমুদ সুজন।

গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির আগে মুনিম ছিলেন দেশের ক্রিকেটে অচেনা এক নাম। কিন্তু লিটন দাসের চোটে আবাহনীর হয়ে সুযোগ পেয়ে ১৪ বলে ১৪৬.১৪ স্ট্রাইকরেটে করে ফেলেন ৩৫৫ রান। অমন পারফরম্যান্সের পরও বিপিএলের ড্রাফট থেকে তাকে দলে নেয়নি কেউ। পরে দল পান ফরচুন বরিশালে।

দলটির হয়ে মাঠে নামতেও লেগে যায় আরও কিছু সময়। টুর্নামেন্টে বরিশালের অগ্রযাত্রায় বড় ভূমিকা রেখে ৬ ম্যাচে ১৫২.১৩ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ১৭৮ রান , টি-টোয়েন্টির বিচারে ২৯.৬৬  গড়ও জুতসই।

ক্রিস গেইলকে ছাপিয়ে বরিশালের পাওয়ার প্লে হৃষ্টপুষ্ট হয় তার ব্যাটে। তার চারটি ইনিংস ছিল এরকম- ২৫ বলে ৪৫ , ২৮ বলে ৫১, ২৫ বলে ৩৭ ও  ৩০ বলে ৪৪। কোন বোলারকে তোয়াক্কা না করে তেড়েফুঁড়ে মারার মানসিকতা, সাবলীল ব্যাটিংয়ের ধরণে মন নজর কাড়েন মুনিম।

বরিশালে তার দলের প্রধান কোচ ও জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর সুজন মুমিনের খেলার ধরণে মুগ্ধ,  'মুমিনকে নিয়ে আমি এটুকুই বলব যে সে খুব সাহসী ছেলে। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতেও দারুণ ব্যাট করেছে। এই টুর্নামেন্টেও খুব ভাল ব্যাট করেছে। হয়ত প্রথম ও আজকের ম্যাচটা ভাল যায়নি। যেভাবে সে ব্যাট করেছেন অসাধারণ। ১৬০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা সহজ না আমাদের স্থানীয়দের জন্য। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ওকে আমরা চিন্তা করতেই পারি। সেটা আজ হোক বা কাল।'

সংক্ষিপ্ত সংস্করণের চাহিদা মেটানোর মতো উপকরণ থাকলে অভিজ্ঞতাতে ছাড় দেওয়া যায় বলেও মত সুজনের, 'আমার কথা হচ্ছে যে অভিজ্ঞতা যে সব সময় প্রয়োজন তাও না। টি-টোয়েন্টিতে আপনার এরকম ভয়ডরহীন কিছু খেলোয়াড় দরকার। দেখেন একটা ছেলেকে যদি সুযোগ না দেন তাহলে কীভাবে অভিজ্ঞতা হবে। সুযোগ দিতে হবে। জাতীয় দলের অধীনে যখন থাকবে তখন ওর ফিটনেস বলেন, ফিল্ডিং বলেন, ব্যাটিং বলেন সব কিছু উন্নত হবে। আর সে খুব তরুণ এমন না, ২৫-২৬ বছর বয়স হয়ে গেছে, কাজেই যথেষ্ট পরিণত। এখনই ওকে পিক করার ঠিক সময়। আমি বলছি না যে ওকে খেলাতেই হবে বা এই ট্যুরেই নিত হবে। কিন্তু ওর কথা আমাদের মাথায় নিতে হবে, কারণ এরকম খেলোয়াড় তো সব সময় বাংলাদেশে আসে না। যারা এরকম ফ্লোলেস খেলতে পারে।'

বিপিপিএলের ফাইনালে ৩৪ বলে ৫৮ করা সৈকত আলির মাঝেও এখনো সম্ভাবনা দেখছেন সুজন। সৈকত ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেকদিন ধরেই চেনা নাম। কিন্তু সেভাবে নিজেকে থিতু করতে পারছিলেন না কোথাও। তার মধ্যে এখনো কিছু রসদ দেখেন বরিশাল কোচ,  'সৈকত আলির কথাও আমি বলব। যে ছেলেটা হারিয়ে গিয়েছিল।। এই ছেলেটার মধ্যে অনেক কিছু পাই আমি। হয়ত বাংলা টাইগার্সে গেলে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।'

শনিবার প্রকাশিত ২৩ সদস্যের বাংলা টাইগার্স দলে জায়গা হয়েছে সৈকতের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে মুনিমের থাকার সম্ভাবনাও প্রবল।

Comments