উচ্চশিক্ষায় শিক্ষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের বিকল্প নেই

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা স্কুল-কলেজে বেশ ভালো রেজাল্ট রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে কিছুটা হোঁচট খাই। আর ভিনদেশ হলে তো কথাই নেই। ভিন্ন ভাষা থেকে শুরু করে নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশ, না বলা অনেক পার্থক্যই ধরা পড়ে তখন। 
ছবি: নাদিয়া রহমান

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা স্কুল-কলেজে বেশ ভালো রেজাল্ট রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে কিছুটা হোঁচট খাই। আর ভিনদেশ হলে তো কথাই নেই। ভিন্ন ভাষা থেকে শুরু করে নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশ, না বলা অনেক পার্থক্যই ধরা পড়ে তখন। 

যারা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই ফান্ডিং হয় কোনো না কোনো অধ্যাপকের মাধ্যমে। এদিক থেকে সামাজিক বিজ্ঞান এবং কলা অনুষদের ফান্ডিং বা স্কলারশিপ ভিন্ন। এই অংশে বেশিরভাগ ফান্ডিংই হয় বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভাগের সেন্ট্রাল পর্যায় থেকে। তাই শুরুর দিকে ভিনদেশের শিক্ষার্থী সম্পর্কে অধ্যাপক জানেন কেবল তার অ্যাপ্লিকেশন পর্যায়ে জমা দেওয়া ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র থেকেই। 

তাই এখানে প্রায় সব অধ্যাপককেই বলতে শুনি, শ্রেণীকক্ষের বাইরে শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। 

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা হয়, একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর গবেষণা ও থিসিসের বিষয়ের আগ্রহ পরিবর্তন হয়। কেননা আমাদের দেশে কোর্স বা কারিকুলামে এত বৈচিত্র্য নেই। আবার এখানে নিজ বিভাগের বাইরেও অন্য বিভাগের নির্দিষ্ট কিছু কোর্স নেওয়া যায়। আমার সহপাঠীদের দেখেছি, যোগাযোগ বিভাগে পড়েও অনেকেই মনোবিজ্ঞান বা সাইকোলজি, পাবলিক হেলথ বিভাগ থেকে কোর্স বাছাই করছে। যার ফলে উচ্চশিক্ষার এই সময়টাতে থিসিসের বিষয়েও অনেক পরিবর্তন আসে। আর এই প্রতিটি পর্যায়ে পরামর্শের জন্য প্রয়োজন অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। 

যুক্তরাষ্ট্রে যেহেতু উচ্চশিক্ষা মানেই গবেষণা, তাই সেমিস্টারের শুরু থেকেই গবেষণা, এর মেথড আয়ত্ত করা প্রয়োজন। এখানে প্রায় প্রত্যেক শিক্ষকই বিভিন্ন গবেষণা, প্রকল্পের কাজে যুক্ত থাকেন। তাই নিজের গবেষণা পরিকল্পনা বা কাজের ইচ্ছা প্রকাশ করলে শিক্ষকের সঙ্গে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করা যায়। আমার বেশ কিছু সহপাঠী গ্রীষ্মের ছুটির সময়টা গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেই তিন মাস পাড় করে দিয়েছেন। যেহেতু এসময় সেমিস্টারের কোনো কোর্স এবং ফান্ড কোনোটাই থাকে না, তাই এই গবেষণার কাজটি অভিজ্ঞতা অর্জন ছাড়াও আয়ের উৎস হিসেবে নেয় অনেকে। 

আর একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিন্ন এক পরিবেশে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়াটাও স্বাভাবিক। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা বন্ধুদের কিছু বিষয় দেখে যেমন সহজ মনে হয়েছে, নিজে যখন বাড়ি ছেড়ে প্রথমবারের মতো বিদেশে পড়তে এসেছি, সামান্য বিষয়গুলোও অনেক ঝামেলার মনে হয়েছে। 

আমরা নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার অনেক পরিকল্পনাই করি খুব উৎসাহ নিয়ে, কিন্তু নতুন এক দেশে শুরুর সময়টা প্রতিকূলই বটে। অন্তত যে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়, যাকে কখনো বাড়ি ছেড়ে এই আত্মীয়-পরিচয়হীন অঞ্চলে থাকতে হয়নি, তার জন্য তো অবশ্যই। অনেক ক্ষেত্রে এই ছোটখাটো বিষয়গুলো বা অসুস্থতা, হেলথ ইনস্যুরেন্সের নানা পলিসির কারণে পড়ালেখায় প্রভাব পড়ে। আর এখানে গ্রেডিং গেল মানে তো পুরো ফান্ডিংই গেল। তাই নিজের এই বিষয়গুলো সুপারভাইজার বা অ্যাডভাইজারকে জানিয়ে রাখা নিরাপদ। এখানকার শিক্ষকরাও সাধ্যমত চেষ্টা করেন একজন শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য, তার সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করতে। তাই বলা চলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই।

নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
 

Comments

The Daily Star  | English

Sohel Chowdhury murder: 3 get life term, 6 acquitted

A Dhaka court today sentenced three people, including Aziz Mohammad Bhai, to life imprisonment and acquitted six others in the case filed over the murder of actor Sohel Chowdhury 25 years ago

1h ago