যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমছে

‘যুক্তরাষ্ট্রে কম আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে পোশাকের চাহিদা পুরোপুরি বাড়েনি।’
স্টার ফাইল ফটো

মার্কিন খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো সারা বিশ্ব থেকে পোশাক আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে।

মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) তথ্য বলছে—চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে ১৭৫ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, গত জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ১৯ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে ১১৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বস্ত্র ও তৈরি পোশাকের সম্মিলিত চালান ১৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে ১৮১ কোটি ডলারে নেমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির চাপ ধীরে ধীরে কমলেও দেশটির খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো পোশাক আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে সেখানে পোশাক রপ্তানি কমছে।

করোনা মহামারির পর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ৫৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০২২ সালে চাহিদা মেটাতে মার্কিন খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো বেশি আমদানি করেছে।

তাদের কাছে অবিক্রীত পোশাক থেকে যাওয়ায় গত বছর পোশাক রপ্তানি তেমন বাড়েনি।

উৎসবের মৌসুমের শুরুতে গত বছরের নভেম্বরে খুচরো বিক্রি বাড়তে শুরু করে। গত বছরের ডিসেম্বরে বিক্রি অনেক বেড়েছিল। তারপর থেকে পোশাকের চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় রপ্তানি বাড়ছে।

তা ছাড়া গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা মজুরি বাড়ানোর আন্দোলনের কারণে দেশের বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করা হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রে কম আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে পোশাকের চাহিদা পুরোপুরি বাড়েনি।'

তিনি আরও বলেন, 'এটি বাংলাদেশকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কারণ এ দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মূলত কম দামের পোশাক রপ্তানি করা হয়।'

তার মতে, 'যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোয় সুদের হার এখনো বেশি। এর অর্থ গ্রাহকরা ঋণের বিপরীতে সুদ পরিশোধে ব্যস্ত। যেমন বাড়ি কেনার জন্য নেওয়া ঋণ, ইত্যাদি।'

এ ছাড়াও, কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট পোশাক রপ্তানিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ক্রেতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অনেক কারখানার মালিক পণ্য পাঠাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর না থাকায় রপ্তানিতে সময় বেশি লাগছে বলে তিনি জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতাদের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) জানিয়েছে, মার্চে খুচরা বিক্রি স্থিতিশীল গতিতে বেড়েছে।

এনআরএফ প্রেসিডেন্ট ও সিইও ম্যাথিউ শে জানান, অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে যতটা সম্ভব পণ্যের দাম কম রাখতে হচ্ছে।

Comments