স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশাল, সাংবাদিকরাও বোঝে না: জাহিদ মালেক

মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশাল। এটা চাল-ডাল বেচাকেনা না, রড-সিমেন্টের বিষয় না। 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মানিকগঞ্জে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি বিশাল মন্ত্রণালয়। বাইরের লোকেরা বোঝে না, সাংবাদিকরাও বোঝে না। 

তিনি বলেন, দেশের লোকেরাও বোঝে না যে, এটা কত বড় মন্ত্রণালয়। এটা চাল-ডাল বেচাকেনা না, রড-সিমেন্টের বিষয় না। 

আজ সোমবার মানিকগঞ্জে করোনাভাইরাস নিয়ে ১০০টির বেশি গবেষণাপত্র সংবলিত সংকলনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, 'স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করে। কত ধরনের সমস্যা, কত ধরনের বিষয়, কত ধরনের অসুখ-বিসুখ, কত ধরনের চাহিদা। এই জিনিসটা বাইরে থেকে লোক বুঝতে পারে না। এত বড় জনবল সাড়ে তিন লাখ লোক। ১০টি মন্ত্রণালয় মিলেও সাড়ে তিন লাখ লোক নাই। সবাই শিক্ষিত, সবাই সেরা ছাত্র। তাদের নিয়ে কাজ করা একদিকে আনন্দের, আবার চ্যালেঞ্জিংও।'

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, 'করোনা মহামারি চলাকালে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকরা বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেছেন। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি এই গবেষণার কাজে যারা আত্মনিয়োগ করেছেন তারা প্রশংসার দাবিদার।'

তিনি বলেন, 'কোভিড নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বে পঞ্চম। এটা কোনো ম্যাজিক নয়। সবাই কাজ করেছি, পরিশ্রম করেছি। কোভিডের কথা উঠলেই অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। তখনকার সময় না বুঝে ডাক্তারদের সমালোচনা, নার্সদের সমালোচনা, আমাদের সমালোচনা করা হয়েছে। সমালোচনার অন্ত ছিল না।'

'আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে সেবাটা দিয়েছে, বহু দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ তা দিতে পারেনি। বড় বড় রাষ্ট্রও দিতে পারেনি। আমেরিকা ফেল করেছে। ট্রাম্প সেজন্য বিদায় নিয়েছে। আমেরিকায় ১২ লাখ, ভারতে ৭-৮ লাখ, ব্রাজিলে প্রায় ১০ লাখ লোক মারা গেছে। ইউরোপের ছোট ছোট রাষ্ট্রের জনসংখ্যা কম। সেসব রাষ্ট্রেও গড়ে তিন লাখ লোক মারা গেছে,' যোগ করেন তিনি।

'আমাদের দেশে করোনায় অল্প কিছু লোক মারা গেছে' উল্লেখ করে মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, 'অনেক দেশ ভ্যাকসিন নেওয়ার আগেই বাংলাদেশের জনগণকে ৩৬ কোটি ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এতকিছুর পরও আমরা প্রশংসা পাই না। কারণ বাঙালিরা প্রশংসা করতে জানে না। অবশ্য পরে প্রশংসা পেয়েছি দেশে-বিদেশে সবখানেই।'

তিনি বলেন, '৮-১০ দিন পর নির্বাচন। আমরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত। তারপরও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গতকালও ঢাকায় গিয়েছিলাম। তিনটি মিটিং করেছি। সামনে এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। পরীক্ষার শিডিউল করে দিয়েছি।'

চিকিৎসাক্ষেত্রে গবেষণা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের বড় বড় হাসপাতাল হচ্ছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। কিন্তু গবেষণা খুবই কম হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় গবেষণার ওপর জোর দিয়ে থাকেন। তিনি গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকাও দিয়েছেন। আমাদের সরকার গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে এনসিটি বাড়ছে, ডায়াবেটিস বাড়ছে। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ক্যান্সারে বেশি লোক মারা যাচ্ছে। খাদ্যের পরিবর্তন কিংবা পরিবেশের জন্য হচ্ছে কি না, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা দরকার কি না, তা গবেষণা হওয়া দরকার। কোভিড আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে থেকে আক্রান্ত হচ্ছে না। আবার রোগীর কাছে না গিয়েও আক্রান্ত হচ্ছে। এসব নিয়েও গবেষণা হওয়া দরকার।'

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'শিশুদের অবেসিটি বাড়ছে। ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ কম হচ্ছে। নারীদের আরও কম। শতকরা ২৪ ভাগ লোক ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করে। এটা বাড়াতে হবে।'

তিনি বলেন, 'স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে গবেষণার মতো  বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রমেও আমাদেরকে সফল হতে হবে। চিকিৎসকদের গবেষণাকর্মে আরও বেশি সময় দিতে হবে।'

এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গবেষণা সংকলনটির সম্পাদক এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসকবৃন্দ।

Comments

The Daily Star  | English

Tk 127 crore owed to customers: DNCRP forms body to facilitate refunds

The Directorate of National Consumers' Right Protection (DNCRP) has formed a committee to facilitate the return of Tk 127 crore owed to the customers that remains stuck in the payment gateways of certain e-commerce companies..AHM Shafiquzzaman, director general of the DNCRP, shared this in

43m ago