বকেয়া বেতন-বোনাস দাবিতে কারখানার সামনে ৪ দিন ধরে বিক্ষোভ

'বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। দোকানদার বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। খুবই কষ্টকর জীবনযাপন করছি'
বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ড্যানিস নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকেরা টানা চার দিন ধরে কারখানা গেইটের সামনে বিক্ষোভ করছেন। ছবি: সংগৃহীত

বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুরের ড্যানিস নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকেরা টানা চার দিন ধরে কারখানা গেইটের সামনে বিক্ষোভ করছেন।

ড্যানিস নিটওয়্যার লিমিটেড পোশাক কারখানায় নিটিং ও প্রিন্টিংয়ে এক হাজার ২০০ এর বেশি শ্রমিক রয়েছেন।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় কারখানার সামনে ব্যানারসহ তাদের অবস্থান করতে দেখা যায়।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার দীপকচন্দ্র মজুমদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শ্রমিকরা চার দিন ধরে কারখানার গেটের সামনে বকেয়ার দাবিতে অবস্থান করছেন।

তিনি বলেন, আমি কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন শিপমেন্ট না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকের বেতন দেওয়া সম্ভব নয়।  কবে শিপমেন্ট হবে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। আমরা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে চেষ্টা করছি।

শ্রমিকরা জানায়, গত ঈদ-উল-ফিতরের ছুটি কাটিয়ে কারখানায় এসে দেখি কারখানা ফটকের সামনে আরও তিন দিন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। তিন দিন পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে।

কারখানার সুইং অপারেটর হাফিজুল ইসলাম বলেন, 'আমি আমার পাওনা চাই। এপ্রিলের ২৪ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনে আছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না। বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। দোকানদার বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। খুবই কষ্টকর জীবনযাপন করছি। আমার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৬ জন। বৃদ্ধ বাবা মা এবং স্ত্রী ও দুই বাচ্চা। খুবই ভোগান্তিতে আছি। দিতে পারছি না বাচ্চার স্কুলের বেতন, পারছি না বাবা মার ওষুধ খরচ দিতে। বাসা ভাড়া দিতে পারছি না।'

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সদস্য সুমা আক্তার, জানান, শ্রমিকরা জানতে পারে মালিক কারখানা অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে ঢাকা শ্রমভবন ঘেরাও করে তারা। সেখানে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। লে-অফ তুলে নেয় কর্তৃপক্ষ। সাধারণ ছুটি ঘোষণা হবে বলে জানান। গত ৫ মে টংগী কলকারখানায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আরও একটি মিটিং ডাকা হয়। সেখানে মালিকপক্ষ উপস্থিত হয়নি।

পরে আবার শ্রমিকরা শ্রমভবন ঘেরাও করে। আন্দোলনের চাপে পড়ে গত ১২ মে কিছু শ্রমিকের বেতন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। স্টাফ ও নিটিং প্রিন্টিংয়ের শ্রমিকদের বেতন এখনও দেওয়া হয়নি।

ড্যানিস নিটওয়্যার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কামাল হোসেন হাওলাদারকে কল দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Comments