ঢাবি ক্যাম্পাসে গোলাম মাওলা রনির ওপর হামলা

‘তারা টার্গেট করেই এই হামলা করেছে। পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে।’
গোলাম মাওলা রনি ও তার ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির ওপর হামলা হয়েছে। আজ সকাল ১১টার দিকে এ হামলা হয়। এতে তিনি আহত না হলেও তার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এ ঘটনায় নীলক্ষেত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রনি।

বিষয়টি নিয়ে বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

রনি বলেন, 'আমার বাসা ঢাকা কলেজের পেছনে এবং অফিস প্রেসক্লাবের সামনে হওয়ায় প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়েই যাতায়াত করি। আজও সেভাবেই যাচ্ছিলাম। তবে সকাল ১১টার দিকে আমার গাড়িটি টিএসসি মেট্রোস্টেশন পার হয়ে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে পৌঁছালে হামলার শিকার হই।'

'সেখানে দুই যুবক হাতুড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল এবং পাশের ফুটপাতে অস্ত্র হাতে ছিল আরও তিনজন। আগ্নেয়াস্ত্রও হতে পারে আবার অন্য কোনো অস্ত্রও হতে পারে, ঠিক কী ছিল আমি লক্ষ্য করিনি', বলেন তিনি।

রনি বলেন, 'গাড়িটি পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে ইউটার্নে আসা মাত্রই হাতুড়ি হাতে দুই যুবক গাড়ির সামনে লাফিয়ে পড়ে। এসময় ড্রাইভার ব্রেক করলে তারা হাতুড়ি দিয়ে উইন্ডশিল্ডে বেধড়ক পেটাতে থাকে এবং গ্লাস খুলে আমাকে বের করার চেষ্টা করে। ড্রাইভার বিপদ আঁচ করতে পেরে গাড়ি টান দেয়। তখন সামনের দুজন সরে যায় এবং পেছনে যারা ছিল তারা দৌড়ে এসে গাড়ির বনেটে পেটাতে থাকে। তবে গাড়ি আরও জোরে টান দিলে তারা আর দৌড়ে পেরে ওঠেনি।'

কেন এই হামলা, কাউকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন কি, জানতে চাইলে রনি বলেন, 'সবাই শার্ট-প্যান্ট পরিহিত ছিল। তারা টার্গেট করেই এই হামলা করেছে। পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে। ফলে এত অল্প সময়ে তাদের চেহারা মনে রাখতে পারিনি।'

'আমার গাড়িটি সেমি-বুলেট প্রুফ গাড়ির মতো। তারা বিষয়টি জেনেই হাই-কোয়ালিটির ভারী হাতুড়ি নিয়ে এসেছে। যাতে গাড়ির গ্লাসটা ভাঙে', যোগ করেন রনি।

তিনি বলেন, 'ঢাকা শহরে এতদিন ধরে আছি, এর আগে কখনোই আমার ওপর কোনো হামলা হয়নি, টেলিফোনেও কেউ কখনো হুমকি দেয়নি, এমনকি কেউ একটা মেসেজ দিয়েও আমাকে কখনো বিরক্ত করেনি।'

এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, জানতে চাইলে রনি বলেন, 'হামলার পরপরই আমি অফিসে চলে যাই। তারপর বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আপনজন ও ছাত্রলীগের সাদ্দামের সঙ্গে কথা বলি। আমার বাসা যেহেতু নীলক্ষেত থানা এলাকায়, তাই এখন নীলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) কিংবা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

সাদ্দামের সঙ্গে কেন কথা বলেছেন, প্রশ্ন করলে রনি বলেন, 'আমি তো আইনের ছাত্র। সাদ্দাম আমার বিভাগের ছোট ভাই। তাই তাকে বললাম যে, তোমরা একটা ভালো জায়গায় আছো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ থাকতে বাইরের কেউ এসে এ ধরনের কাজ করে চলে যাবে তা আমি মনে করি না। আমার একটা বিশ্বাস ছিল, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দিয়েই সবসময় যাতায়াত করতাম। তবে আজকের ঘটনায় আমার বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেল। তুমি বিষয়টা দেখো।'

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। ঘটনাটি অপ্রীতিকর এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। যেহেতু ক্যাম্পাসের মধ্যে ঘটেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত হামলাকারীকে খুঁজে বের করার আহ্বান জানাই।'

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কারও বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

475 workplace deaths in 6 months: report

Of the total number, 250 transport workers died in this period, 74 died in service establishments (such as workshops, gas, electricity supply establishments), 66 in agricultural sector, 52 in construction, and 33 died in factories and other manufacturing institutes

35m ago