৭ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই, কালিগঞ্জে এক মিলেই পড়ে আছে ৬০০ মন ধান

‘রিমালের তান্ডবের পর থেকে আমাদের এই অঞ্চলে একেবারেই বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সারাদিন অলস সময় পার করছি। আমার সাথে সহকর্মীরাও কোনো কাজ না করে সারাদিন পার করছে। দিনের পর দিন এভাবে বসে থাকতে হচ্ছে। আর কত?’
কালিগঞ্জের ভাওয়াল জামালপুর এলাকায় আফসানা রাইস মিল। ছবি: স্টার

গাজীপুরের কালিগঞ্জে ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ধান মিল মালিক শ্রমিক ও গ্রাহকেরা। বিদ্যুৎ না থাকায় ধান ভাঙিয়ে চাল বানাতে না পেরে এক মিলে আটকে আছে ৬০০ মণ ধান।

আজ সোমবার সকাল ১০টায় কালিগঞ্জের ভাওয়াল জামালপুর এলাকায় আফসানা রাইস মিল পরিচালক শ্রাবণ রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের সব কাজে বিদ্যুৎ লাগে। আামাদের কয়েকশ গ্রাহক। টানা সাত দিন হলো ধান স্তূপাকৃতি করে রেখে দিছি। বিদ্যুৎ না থাকায় গ্রাহককে চাল দিতে পারছি না অন্যদিকে, গত ৭ দিন ধরে ১৫ জন কর্মচারী বেকার বসে আছে।'

তিনি আরও বলেন, 'মিলে এলাকার কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে সেদ্ধ করা হয়। ধান শুকানো হয়। ধান থেকে চাল বানানো হয়। আমাদের মিলে ধান সেদ্ধ করে শুকানো আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় চাল বানাতে পারছি না, ৬০০ মণ ধান মিলের মাঠে পড়ে আছে।'

মিলের শ্রমিক জান্নাত, মিন্টু, আবুল, সোহাগ, রিদয়, শুক্কুর জানান, বিদ্যুৎ নেই তাই কোনো কাজকর্ম নেই। কালিগঞ্জের অন্য সব রাইস মিলেও একই অবস্থা।

কালিগঞ্জের কলা পাটুয়া গ্রামের চা দোকানী আওলাদ হোসেন বলেন, 'গত সাত দিন ধরে রাত দিন বসে থাকি। রাতে পরিবারের লোকজন ঘুমাতে পারে না। বিদ্যুৎ না থাকায় ইঞ্জিনে পানি তোলা যাচ্ছে না। ঠিক মতো পানি খেতেও পারছি না। এলাকায় কোনো টিউবওয়েলও নেই।'

কাপাইস গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল বলেন, 'রিমালের তান্ডবের পর থেকে আমাদের এই অঞ্চলে একেবারেই বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সারাদিন অলস সময় পার করছি। আমার সাথে সহকর্মীরাও কোনো কাজ না করে সারাদিন পার করছে। দিনের পর দিন এভাবে বসে থাকতে হচ্ছে। আর কত?'

জানতে চাইলে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ কালিগঞ্জ উপকেন্দ্রের জুনিয়র প্রকৌশলী গৌতম দাস বলেন, 'আমার গ্রিডে বিদ্যুৎ নেই। এলাকা মানুষ বিদ্যুৎ পাবে কীভাবে? আামাকে এলাকা থেকে অনেকে ফোন করে। আমি গ্রাহকদের বুঝানোর চেষ্টা করছি।'

গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর (কালীগঞ্জ আঞ্চলিক অফিস) উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আক্তার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পিডিবি একটি ট্রান্সফরমার চট্টগ্রাম থেকে আনবে শুনেছি। আনার পর সংযোগ দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।'

কালিগঞ্জে বিদ্যুতের চাহিদা ২৮ মেগাওয়াট। আপাতত ১০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'ঘোড়াশাল গ্রিডে ১৩২-৩৩ কিলোভোল্টের (কেভি) দুটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার রয়েছে। একটি ১৬ আরেকটি ১২ মেগাওয়াটের। এর মধ্যে ১৬ মেগাওয়াটের ট্রান্সফরমারটি গত রোববার বিকল হয়ে গেছে।'

Comments