টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

রিভিউ বিশ্লেষণ: ছোট দল যখন বড়, বাংলাদেশ যেখানে

সব মিলিয়ে ১২৬ বার ডিআরএস ব্যবহার করা হয়েছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এর মধ্যে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে ৩০ বার। অর্থাৎ টুর্নামেন্টে রিভিউ নিয়ে সফলতার হার ছিল ২৩.৮০ শতাংশ।
ছবি: এএফপি

সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রিভিউ নেওয়ায় সবচেয়ে সফল দল কোনটি? আপনি যে দলের নামই বলুন না কেন, ধরে নেওয়াই যায়, সেটা নামিবিয়া হবে না। তবে বিস্ময়কর হলেও সত্য, রিভিউয়ে সফলতার হার সবার থেকে ভালো গেরহার্ড এরাসমাসের দলের।

কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপের নবম আসরে নামিবিয়া যদিও মাত্র দুটি রিভিউই নিয়েছে। তারা সফল হয়েছে একবার। এটা ঠিক, ব্যর্থ হওয়ার মতো যথেষ্ট রিভিউই নেয়নি নামিবিয়া। কিন্তু দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাফল্য পাওয়া দেশের নামও আপনাকে চমকে দেবে!

আফ্রিকা মহাদেশের আরেকটি দেশ উগান্ডার রিভিউয়ে সফলতার হার শতকরা ৪০ ভাগ। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসে দলটি ১০টি রিভিউ নিয়েছে। এর মধ্যে তাদের পক্ষে ফল এসেছে চারটিতে। অথচ আইসিসির সহযোগী এসব দেশের খেলোয়াড়রা রিভিউ ছাড়াই বলতে গেলে খেলে থাকেন সব সময়!

অবশ্য ডিআরএসে (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) উগান্ডার সমান সাফল্য পেয়েছে আরও দুটি দল। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ— এই দুই দলই পাঁচটি করে রিভিউ নিয়ে দুবার মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পেরেছে। 

রিভিউয়ে আগের বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্টের অবস্থা বেহাল ছিল ২০২৪ সালে। সাতটি ডিআরএসে ইংল্যান্ড সফলতার মুখ দেখেনি একবারও। আর পাকিস্তানের একই ফলাফল থেকেছে রিভিউয়ের সংখ্যা নয় হওয়া সত্ত্বেও। রিভিউয়ে খালি হাতে শেষ করার দলে তাদের সঙ্গে রয়েছে পাঁচটি ডিআরএস নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র। একবারও রিভিউয়ে সফলতার উদযাপনে মেতে উঠতে না পারা আরও তিনটি দল হচ্ছে কানাডা, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড। যদিও কোনো দলই তিনটির বেশি রিভিউ নেয়নি।

সহযোগী দেশগুলো সাধারণত ডিআরএস ছাড়াই খেলতে অভ্যস্ত হলেও তারা এটার যথার্থ ব্যবহারই দেখিয়েছে। ওমান যেমন রিভিউয়ের ক্ষেত্রে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়ার কাতারে। দুই দলই সমান আটটি করে রিভিউ নিয়ে তিনটিতে ফল বদলাতে পেরেছে। 

আবার নেদারল্যান্ডসের সাফল্য ছিল এবারের দুই ফাইনালিস্টেরই সমান। রানার্সআপ দক্ষিণ আফ্রিকার সমান তিনটি ডিআরএস নিয়ে ডাচরাও একবার সফল হয়েছে। আর চ্যাম্পিয়ন ভারত দুটি সফল রিভিউয়ের জন্য নিয়েছে ছয়টি ডিআরএস। শতকরা ৩৩.৩৩ ভাগ সাফল্য থাকা এই তিনটি দলের পেছনেই রয়েছে বাংলাদেশ।

৩০.৭৭ শতাংশ সাফল্য নিয়ে এই তালিকায় দশম স্থানে থাকা টাইগাররা ১৩ বার আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানায়। এর মধ্যে চারবার আম্পায়ারকে ভুল প্রমাণিত করতে পারে তারা। বোলিংয়ের সময় অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত তিনটি রিভিউ নিয়েছেন। নট আউটকে তিনি আউটে পরিণত করতে পেরেছেন একবার।

পুরো টুর্নামেন্টে ১০টির বেশি রিভিউ নেওয়া দুটি দলের একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি ১৯টি রিভিউ নিয়েছে আফগানিস্তান। যাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে ১৪ বার। আফগানদের ২১.০৫ শতাংশ সফলতার হারের কাছাকাছি রয়েছে এশিয়ার আরেক দেশ নেপাল।

আবার নেপালের অবস্থান নিউজিল্যান্ডের ওপরে! কিউইদের যেখানে একটি সফল রিভিউ পেতে খরচ করতে হয়েছে ছয়টি ডিআরএস, নেপালের লেগেছে পাঁচটি। রোহিত পাউডেলের দল রিভিউ নিয়ে শতকরা ২০ ভাগ সফলতা পেয়েছে। প্রথম পর্বে ছিটকে পড়া নিউজিল্যান্ডের রিভিউয়ের পারফরম্যান্সও হতাশাজনকই থেকেছে। তাদের সাফল্যের হার ছিল ১৬.৬৭ শতাংশ। কেইন উইলিয়ামসনদের সমান ছয়টি রিভিউ নিয়ে পাপুয়া নিউগিনিও ব্যর্থ হয়েছে পাঁচটিতে।

সব মিলিয়ে ১২৬ বার ডিআরএস ব্যবহার করা হয়েছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এর মধ্যে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে ৩০ বার। অর্থাৎ টুর্নামেন্টে রিভিউ নিয়ে সফলতার হার ছিল ২৩.৮০ শতাংশ। সেক্ষেত্রে ৩০.৭৭ শতাংশ নিয়ে গড় মানের থেকে বাংলাদেশ ভালোই এগিয়ে আছে। কিন্তু মাঠের খেলায় সার্বিকভাবে হতাশার গল্পই লেখা হয়েছে আরেকবার!

পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে নামিবিয়া, উগান্ডা ও ওমানের মতো দলগুলো পিছিয়ে থেকেছে প্রত্যাশিতভাবেই। কিন্তু রিভিউয়ে সাফল্যের তালিকায় প্রথম আট দলের মধ্যে চারটি সহযোগী দেশ। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রিভিউয়ের ক্ষেত্রে অন্তত ছোট দল হয়ে উঠেছিল বড়!

Comments

The Daily Star  | English

BB finds six types of wrongdoing in export data

The central bank discovered six types of statistical wrongdoing that inflated export data, a development that led to a multibillion-dollar correction.

9h ago