মোবাইল খুঁজতে জলাধারের ২১ লাখ লিটার পানি নষ্ট, ভারতীয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত

ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতার অপব্যবহারের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের এক আমলা। জলাধারে মোবাইল পড়ে যাওয়ায় সেটি উদ্ধারে ৪ দিন ধরে পাম্প বসিয়ে জলাধারের পানি সরিয়েছেন তিনি।

মধ্য ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম রাজেশ বিশ্বাস। তিনি একজন খাদ্য পরিদর্শক।

গত ২১ মে ছত্তিশগড়ের খেরকাট্টা জলাধারের পাশে বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তোলার সময় রাজেশ বিশ্বাসের মোবাইলটি পানিতে পড়ে যায়। ডুবুরিরা প্রায় ১ লাখ টাকা দামের ওই মোবাইল উদ্ধারে ব্যর্থ হলে সাড়ে ৪ মিটার গভীর ওই জলাধারের পানি সরানোর নির্দেশ দেন তিনি।

৪ দিন ধরে দুটি ডিজেল পাম্প স্থাপন করে প্রায় ২১ লাখ লিটার পানি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যা দিয়ে প্রায় ৬০৭ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ দেওয়া যেত।

অভিযোগের পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার জলসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাম্পগুলো বন্ধের নির্দেশ দেন।

পরদিন ক্ষমতার অপব্যবহার, 'অগ্রহণযোগ্য আচরণ' এবং প্রচন্ড গরমের মধ্যে পানি অপচয়ের জন্য রাজেশ বিশ্বাসকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

আত্মপক্ষ সমর্থন করে রাজেশ বিশ্বাস বলেছেন, ওই পানি 'ব্যবহারের অযোগ্য' ছিল।

এনডিটিভিকে তিনি বলেছেন, ডুবুরিরা তার ফোন উদ্ধার করতে পারেনি কারণ পানি তাদের সীমার প্রায় ১০ ফুট বা ৩ মিটার গভীরে ছিল। ডুবুরিরা বলেছিল পানির স্তর ২ থেকে ৩ ফুট কম হলে মোবাইলটি উদ্ধার করা যেত।

এ কথা শুনে তিনি স্থানীয় সাব ডিভিশনাল অফিসার (এসডিও) আরসি ধীভারের কাছে পানি সরিয়ে ফেলার জন্য মৌখিক অনুমতি চেয়েছিলেন।  পানির স্তর প্রায় ৪ ফুট কমিয়ে যদি পানি নিয়ে খালে ফেলা হয় তাতে স্থানীয় কৃষকদের উপকৃত হবে এমনটাও জানান তিনি।

মৌখিকভাবে এসডিও তাকে অনুমতি দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

তবে 'পানি ব্যবহারের অযোগ্য ছিল' এমন দাবি অস্বীকার করেছেন ওই জেলার শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা ডা. প্রিয়াঙ্কা শুক্লা।

অন্যদিকে স্থানীয় কৃষকরা বলেছেন, তাদের আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। সে কারণে তারা কৃষিজমিতে ওই পানি আনতে পারেননি। স্থানীয় এক গ্রাম প্রতিনিধি জানান, এই পানি অপচয়ের কারণে 'কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি' হয়েছে।

রাজেশ বিশ্বাসের মোবাইলটি অবশেষে পাওয়া গেলেও সেটি আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

ঘটনাটি বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে এসডিও মৌখিকভাবে পানি সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন তাকে কারণ দর্শনো নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং অপচয় হওয়া পানির খরচ বহন করতে বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
problems in filing complaints in police stations

No scope to verify authenticity when cases are filed: IGP

Instructions have already been issued to ensure that no one is arrested in a harassing manner, he says

1h ago