আইজিপির যুক্তরাষ্ট্রে যেতে সমস্যা হবে কি না আগেই জানার চেষ্টা করব: পররাষ্ট্রসচিব
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদ জাতিসংঘের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধার মুখে পড়বেন কি না সেটি আগেই জানার চেষ্টা করা হবে।
পররাষ্ট্রসচিব আজ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আন্তর্জাতিক সংস্থা বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল জে সিসনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরষ্ট্র। র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে বেনজীর আহমেদের নাম আছে এই তালিকায়।
বেনজীর আহমেদ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যেতে সমস্যায় পড়বেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'দেখা যাক, যদি কোনো রকমের অসুবিধা না হয়, তাহলে আমরা আশা করছি, উনি যোগ দিতে পারবেন। আর যদি সমস্যা থাকে, সেটা আমরা আগেই জানার চেষ্টা করব।'
নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো চুক্তি আছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, 'এ রকম একটা জেন্টেলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট বা কনভেনশন আছে। অতীতেও আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ নিয়মের ব্যতিক্রম দেখেছি। এটা না হওয়া পর্যন্ত বলা মুশকিল।'
আইজিপিকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না দেওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বলেন, 'এটা নিয়ে আমরা এখনো যোগাযোগ করিনি। যেহেতু জিও (সরকারি আদেশ) হয়েছে, সেহেতু তার যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।'
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বড় অগ্রগতি
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভাসান চরে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়ন নিয়ে সংকট মোকাবিলায় এটি বড় একটি অগ্রগতি।
বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ গত বছরের অক্টোবরে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে যার মাধ্যমে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো ভাসানচরে প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে মানবিক সহায়তা দেওয়া শুরু করে যা আগে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, 'তারা [যুক্তরাষ্ট্র] ভাসানচরে সহায়তা দেবে। এটা একটা নতুন জিনিস। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।'
রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে তহবিল সংকট চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এই পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, কক্সবাজার ও ভাসান চর মিলিয়ে আনুমানিক ৯ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার জন্য এ বছর ৮৮১ মিলিয়ন ডলারের বেশি প্রয়োজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর মাত্র ১৩ অর্থায়ন নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মোমেন বলেন, কক্সবাজার ও ভাসানচরের ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থা এবং দেশে তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানের জন্য বিভিন্ন অর্থায়ন ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার জন্য মার্কিন সহায়তা চেয়েছে ঢাকা। পাশাপাশি তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ায় বাইডেন প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
মিশেল জে সিসনের সঙ্গে বৈঠকে মাসুদ বিন মোমেন রোহিঙ্গাদের তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসনের সম্ভাবনার কথাও বলেছেন। তবে তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সমাধান বলেও তিনি মত দেন।
Comments