ইকবাল হাসান মাহমুদের বক্তব্যের প্রতিবাদ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু গত ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপণ করেছে, তা 'ভিত্তিহীন ও অনাকাঙ্ক্ষিত' উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ও অতিরিক্ত আইজিপি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মো. মনিরুল ইসলাম এবং সাধারন সম্পাদক ও উপপুলিশ কমিশনার (ডিএমপি-গুলশান) মো. আসাদুজ্জামানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর 'মন্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত বিব্রত ও মর্মাহত হয়েছে'।

এতে আরও বলা হয়েছে, মহান বিজয়ের গৌরবময় মাসে উল্লিখিত মতবিনিময় সভায় ইকবাল হাসান মাহমুদ ওরফে টুকু বলেন, 'আজকে প্রশাসন দলীয়করণ হয়েছে। এই সরকার প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান আর্মি দেশ শাসন করার জন্য কিছু অক্সিলিয়ারি (সহযোগী) ফোর্স তৈরি করেছিল। রাজাকার, আলবদর এদের তৈরি করেছিল। এখন সেই অক্সিলিয়ারি ফোর্স হয়ে গেছে এই পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি। সহজ ভাষায়, তারা রাজাকার হয়ে গেছে। বর্তমানের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নব্য রাজাকার হচ্ছে প্রশাসনের এই লাঠিয়াল বাহিনী।' তার এই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অতীতের বিভিন্ন সময়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালনকারী একটি দলের একজন দায়িত্বশীল নেতার কাছ থেকে পুলিশের মতো দেশপ্রেমিক ও পেশাদার বাহিনী সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত। তিনি বাংলাদেশ পুলিশকে 'নব্য রাজাকার' বলায় ২ লক্ষাধিক পুলিশ সদস্য অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় বীর সদস্যরা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্যের সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ ও প্রায় সহস্রাধিক পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উত্তরাধিকারী বাংলাদেশ পুলিশ সেবার সুমহান ব্রত নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধকারী এবং গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উত্তরাধিকারী বাংলাদেশ পুলিশ সম্পর্কে এহেন আপত্তিকর মন্তব্যে দেশবাসী হতবাক ও বিস্মিত হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রদান হতে বিরত থাকবেন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন এটাই প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশ পুলিশ সর্বদা রাষ্ট্রের কল্যাণে ও জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে। দেশের শান্তিপ্রিয় ও উন্নয়নকামী মানুষ সবসময় পুলিশের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে আইনসংগত সকল কাজে পুলিশের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন বজায় রাখবে বলে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

Comments

The Daily Star  | English

Awami League tenure: ACC probing 15yrs of financial irregularities

The Anti-Corruption Commission (ACC) has launched an investigation into alleged corruption by individuals, financial institutions, industrial groups, and loan defaulters during the Awami League’s 15-year tenure, which it claims led to the destruction of the country’s financial system.

3h ago