শেকল ভাঙার পদযাত্রা
পিতৃতান্ত্রিক ও নিপীড়নমূলক ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ থেকে জাতীয় সংসদ ভবন অভিমুখে 'শেকল ভাঙার পদযাত্রা' হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে এই পদযাত্রা শুরু হয়।
আয়োজকরা জানান, শিক্ষার্থী-জনতার রক্তস্নাত বিপ্লবের ফসল হিসেবে দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন হলো। এতদিন ধরে আমরা পিতৃতান্ত্রিক এবং নিপীড়নমূলক যে ক্ষমতা কাঠামো দেখেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে সেই সংস্কৃতি পরিবর্তিত হবে তো- সেই দাবি জানাতেই ২০২০ সালের ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া 'শেকল ভাঙার পদযাত্রা' চতুর্থতম বারের মতো রাজপথে নেমেছে।
তারা জানান, দিনে হোক বা রাতে, আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে, নারী হিসেবে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায় সরকারের। অপরাধ সংঘটিত হলেই 'মেয়েরা এতো রাতে বাইরে কেন?' চলমান এই সামাজিক ট্যাবুর মুখ আমরা আজীবনের জন্য বন্ধ করে দিতে চাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের সকল দাবি একসঙ্গে তুলে ধরতে চাই।
আয়োজকরা আরও জানান, শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের রাস্তায় আমরা হাঁটব, গলা উঁচিয়ে প্রতিবাদ করব, গান গাইব, রাতের অন্ধকার ভেদ করে সবাইকে জানিয়ে দেব আমাদের দাবির কথা।
মানিক মিয়া এভিনিউয়ে পৌঁছে সমাবেশ এবং প্রতিবাদী অবস্থান করা হবে বলেও জানান তারা।
এসময় তনু ধর্ষণ ও হত্যা মামলাসহ এরকম আরও অনেক ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়।
তারা দাবি করেন, ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (সংশোধিত) এর ১৪৬ (৩) ধারা পুনঃসংস্কার করার মাধ্যমে আইনের দিকসহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লৈঙ্গিক পরিচয় নির্বিশেষে যৌন সহিংসতার ক্ষেত্রে যেকোনোভাবেই 'ভিক্টিম ব্লেমিং' (দোষারোপ করা/নিন্দা জানানো) বন্ধ করতে হবে।
এছাড়াও কোন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হলে ৯০ দিনের মধ্যে দ্রুততম ট্রাইব্যুনালে অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার, নারী নিপীড়নের শিকার অভিযোগ জানাতে গেলে থানা ও আদালতে পুলিশি ও অন্যান্য হয়রানি বন্ধের দাবিসহ 'শেকল ভাঙার পদযাত্রা' থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১৩ দফা দাবি জানানো হয়।
Comments