ফাইনালেও কেউ দেখাবে মুন্সিয়ানা, আশায় দুই অধিনায়ক

Dhaka Premier League T-20
ট্রফি নিয়ে দুই অধিনায়ক ফরহাদ রেজা ও নুরুল হাসান সোহান। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সীমিত পরিসরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ আর তরুণ ক্রিকেটার মুন্সিয়ানা দেখিয়ে নিজেদের আলোয় এনেছেন। প্রায় প্রতি ম্যাচেই ঘটেছে কিছু না কিছু। ঝড়ো ইনিংসে মাত করেছেন কেউ, কেউ হ্যাটট্রিকে চিনিয়েছেন নিজেকে। আবার দেখা মিলেছে টাই ম্যাচেরও। পুরোপুরি দেশীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে হওয়া এই টুর্নামেন্টের ফাইনালেও তেমন কিছু দেখার আশা করছেন ফাইনালিস্ট দুই অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান আর ফরহাদ রেজা।

সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ডিপিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে লড়বে শেখ জামাল ধানমন্ডি আর প্রাইম দোলেশ্বর। ফাইনালের আগের দিন বিকেলে অনুশীলন শেষে শেখ জামাল অধিনায়ক সোহান আর দোলেশ্বর অধিনায়ক ফরহাদ ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করেছেন। তার আগে চলেছে সিরিয়াস অনুশীলন। ৫০ ওভারের মূল লিগের আগে এই টুর্নামেন্টকে প্রস্তুতির আদলে রাখলেও তাতে লড়াইয়ের আঁচও মিলছে বেশ তীব্র।

তবে সেই লড়াই থেকে ভিন্ন একটি দিক সব দলের সব ক্রিকেটারকেই রেখেছেন এক জায়গায়। এই টুর্নামেন্ট যেন স্থানীয় ক্রিকেটারদের সামর্থ্য প্রমাণেরও মঞ্চ। অন্তত তারা সেই ভেবেই নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছেন।

ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির আসর হলেও বিপিএলে জাতীয় দলের বাইরের দেশি ক্রিকেটাররা নিজেদের ওইভাবে মেলে ধরার জায়গা পান না। বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে অনেকটা আন্তর্জাতিক আমেজে হওয়ায় স্থানীয়দের অনেকেই পান না গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ। ডিপিএল টি-টোয়েন্টিতে কেবলই স্থানীয়রা খেলায় নিজেদের স্কিল দেখানোর সেই সুযোগ মিলেছে তাদের।

গ্রুপ পর্বে তেমন কিছু নৈপুণ্যও দেখা গেছে। দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছেন শুভাগত হোম। পেসার মানিক খান হ্যাটট্রিকে চিনিয়েছেন নিজেকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে চেনা মুখ জিয়াউর রহমান, অলক কাপালীরা ঝড় তুলে দেখিয়েছেন এখনো  যাননি ফুরিয়ে। সাব্বির হোসেন, রুবেল মিয়াদের মতো তরুণদেরও দেখা গেছে নিজেদের মেলে ধরতে।

প্রায় প্রতি ম্যাচেই উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে ফাইনালে আসা শেখ জামাল অধিনায়ক সোহান মনে করছেন ক্রিকেটাররা শতভাগ নিংড়ে দেওয়াতে এই টুর্নামেন্টে মিলেছে লড়াইয়ের ঝাঁজ, ‘পেশাদার খেলোয়াড়রা যখন খেলে তখন প্রথম শ্রেণী হোক, ওয়ানডে বা টি-টুয়েন্টি হোক, সবারই চেষ্টা থাকে শতভাগ দিয়ে ভালো খেলার। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় টুর্নামেন্ট অনেক প্রতিযোগিতা পূর্ণ হয়েছে।’

বিপিএলের সুযোগ কম পাওয়া কিংবা না পাওয়াদের জন্য এমন আসর ভীষণ জরুরী। সোহানের মতে আর এই কারণে দেখা মিলছে দারুণ কিছু নৈপুণ্যের, ‘ভারত বলেন বা অন্য যে কোনো দেশে দেখবেন এই ধরনের টুর্নামেন্ট হয়। বিপিএলে আন্তর্জাতিক একটা ফ্লেভার থাকে। সেক্ষেত্রে হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় খেলোয়াড়রা  সুযোগ একটু কমই পেয়ে থাকে। কারণ আপনি দেখেন চারটা বিদেশি যখন খেলবে, বেশিরভাগ দলে টপ অর্ডারে তিনজন বিদেশি খেলায়, তাই  ব্যাটিং অর্ডারে বাকিরা নিচে চলে আসতে হয়। টি-টুয়েন্টিতে এমন টুর্নামেন্ট হলে আমরাও বুঝতে পারব যে কিভাবে খেলতে হবে। অবশ্যই আমার মনে হয় আমাদের প্লেয়ারদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ’

প্রায় একই সুর ফরহাদ রেজার কণ্ঠেও, ‘দেখেন বিপিএলে আমরা খুব কম সুযোগ পাই। সমস্যা হল আমরা খুব কম ম্যাচ খেলি। যারা বিদেশি আসে তারা সবসময় টি-টুয়েন্টি খেলেই আসে। আমরা এই ফরম্যাটে প্রতি বছর ছয়টা, আটটা, দশটা, এর বেশি ম্যাচ খেলি না। আমরা যদি বিপিএলের আগে আট-দশটা ম্যাচ খেলতে পারি, দেখবেন যে আমাদের খেলাও উন্নত হবে।’

ফাইনালে উঠায় দুদল সুযোগ পাচ্ছে চার ম্যাচ খেলার। যারা গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে তারা খেলেছে কেবল দুই ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোতে যারা আলো কেড়েছেন ফাইনালেও চোখ তাদের উপর।

সেমিফাইনালে ২৯ বলে ৭২ রানের তাণ্ডব দেখিয়ে মাত করা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেমন আলাদা ভাবনায় দোলেশ্বর অধিনায়ক ফরহাদ,  ‘ওদের জিয়া ভাই আছে, দুই তিনজন পাওয়ার প্লেয়ার আছে যারা হেভি হিট করতে পারে। বোলিংও ভালো আছে। শহিদুল আছে।’

আর প্রতি ম্যাচেই জম্পেশ লড়াই করে আসা শেখ জামাল অধিনায়ক সোহান প্রতিপক্ষকে আমলে নিয়েও নিজেদের রাখছেন এগিয়ে,  ‘প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচ হচ্ছে। যদি আগে ব্যাট করি তাদের অল্প রানে আটকানোর লক্ষ্য থাকবে। আর আগে ব্যাট করলে যত বেশি রান করতে পারি। অবশ্যই ওরা ভালো দল। তবে আমরা যেভাবে খেলছি, অবশ্যই আমাদের দল অনেক ভারসাম্যপূর্ণ।  যদি আমরা পরিস্থিতি অনুযায়ী তাহলে ভালো কিছু হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

5h ago