উখিয়া-টেকনাফ এখন মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে: সাবের হোসেন

coxs_bazar_forest_in_danger-1.jpg
জ্বালানির জন্য আশপাশের বনভূমি থেকে নির্বিচারে গাছপালা কেটে নিচ্ছে রোহিঙ্গারা। ছবি: মোকাম্মেল শুভ/স্টার

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আর এক ইঞ্চিও বনভূমি দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের। যা পূরণ করা সম্ভব নয়।”

একাদশ জাতীয় সংসদের ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র ৮ম বৈঠক আজ (১৮ অক্টোবর) কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের শহীদ জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের কারণে বন গেছে, গাছ নেই, পশুপাখিসহ ধ্বংস হয়েছে জীববৈচিত্র্য, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বন্যহাতি। এখন নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে পানি সংকট।”

“প্রায় ১০ হাজার গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন পানি তোলা হচ্ছে। ফলে পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে নামছে আর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পানি সংকট। পানি সংকটের কারণে আগামীতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। সবকিছু মিলে উখিয়া টেকনাফ এখন মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে,” বলেন তিনি।

পাহাড় কাটা নিয়ে সাবের হোসেন বলেন, “যারা পাহাড় কাটবে তাদের রেহাই নেই। এনজিওরা পাহাড় কাটায় জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নির্দিষ্ট স্থানে ৬৩টি হাতি রয়েছে। এসব হাতির চারিদিকে গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গা বসতি। তাই হাতিগুলো বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এসব হাতি সুরক্ষার। বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য করিডোর করার পরিকল্পনা রয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

৮ম সংসদীয় কমিটির সভায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কী পরিমাণ পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণের জন্য কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি আগামী নভেম্বর মাসে তার প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে। 

rohingya_refugees_near_balukhali-1.jpg
কক্সবাজারের বালুখালীতে বসতঘর নির্মাণের জন্য পাহাড় কেটে পরিষ্কার করছে রোহিঙ্গারা। ছবি: রয়টার্স

কক্সবাজার শহরে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ে সম্প্রতি শতাধিক মাদার ট্রি গাছ কাটার ব্যাপারে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “অনুমতি না নিয়ে নিজস্ব কমান্ডে গাছ কাটায় এখন কর্তনকৃত এসব গাছ বিক্রি ও বাইরে কোথাও নিয়ে যেতে পারবে না। এ ব্যাপারে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা হবে।”

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, “সরকার পরিবেশ সুরক্ষার ওপর খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে। পাহাড় কাটা, বন ধ্বংস করাসহ নানাভাবে পরিবেশ ধ্বংস করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষা হলেই মানুষসহ সমস্ত প্রাণীকুলের সুরক্ষা হবে।”

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, স্থায়ী কমিটির সদস্য জাফর আলম, আনোয়ার হোসেন, মো. মোজাম্মেল হোসেন, নাজিম উদ্দিন, রেজাউল করিম বাবলু, বেগম খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, উপসচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

7h ago