আফিফের ব্যাটে ম্লান মালানের সেঞ্চুরি
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের হয়ে একা লড়ে দারুণ সেঞ্চুরি করেছিলেন ডেভিড মালান, দলকে পাইয়ে দিয়েছিলেন লড়াইয়ের পূঁজি। কিন্তু শিশিরসিক্ত মাঠে লিটন দাস, আফিফ হোসেন, রবি বোপারার ব্যাট উত্তাল হয়ে উঠায় বিফলে গেছে তার সেঞ্চুরি। ঝড়ো শুরুর এনে লিটন ফিরলেও আফিফ ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে গড়ে দিয়েছেন ব্যবধান, পরে ঝড় তুলে রাজশাহীকে বন্দরে পৌঁছে দেন রবি বোপারা।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এবারের বিপিএলের শেষ ম্যাচে ১৭০ রান জড়ো করেছিল কুমিল্লা। সেই রান ১৩ বল বাকি রেখে টপকে ৭ উইকেটে জিতেছে রাজশাহী রয়্যালস। টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচ খেলে আন্দ্রে রাসেলদের এটি চতুর্থ জয়। এতে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়েও উঠে গেছে তারা।
দলকে জিতিয়ে ৫৩ বলে ৭৬ রান করের আফিফ। ২৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন বোপারা।
১৭১ রানের লক্ষ্যে লিটন দাস-আফিফ হোসেন নেমেই তুলেন ঝড়। দুজনের ব্যাটই হয়ে উঠে উত্তাল। আল-আমিনের দ্বিতীয় ওভার থেকেই এল ২৪ রান। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে এল ৫৮ রান।
রান করা মনে হচ্ছিল অতি সহজ। আগের ম্যাচের মতই চোখ ধাঁধানো সব শটে লিটন ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন বড় কিছুর। কিন্তু মুজিবুর রহমানের রঙ ওয়ান বুঝতে না পেরে থামে তার ১৯ বলে ২৭ রানের ইনিংস।
খানিক পর প্রথম ওভারে মার খাওয়া আল-আমিন দ্বিতীয় ওভারে এসে আউট করে দেন শোয়েব মালিককে। দারুণ শুরুর পর দ্রুত দুই উইকেট হারানোর ধাক্কা তখন রাজশাহীর। সেই ধাক্কা উধাও হয়ে যায় আফিফের ব্যাটে। জাতীয় দলের তরুণ এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আগ্রাসী মেজাজে চাপ উলটো ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষের উপর। একের পর এক চারে খেলতে থাকেন স্ট্রোক ঝলমলে ইনিংস।
৫৩ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৭৬ রান করে তিনি যখন ক্যাচ উঠিয়ে ফিরছেন দলের জিততে দরকার ২৯ বলে ৩৯ রান।
টপাটপ চার-ছক্কা মেরে ওই রান উঠাতে দেরি করেননি ২৩ বলে ৪৪ করা বোপারা আর মাত্র ৮ বলে ২১ করা রাসেল।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করা কুমিল্লার নায়ক একজনই। ছন্দে থাকা ডেভিড মালান আগের ম্যাচে রান পাননি, ভুগেছিল দল। এদিন মালান উঠলেন ওপেনিংয়ে। আগের ম্যাচে প্রায় সেঞ্চুরি করা ভানুকা রাজাপাকশে এবার ব্যর্থ, ওয়ানডাউনে নেমে আবার ব্যর্থ সাব্বির রহমান। ওপেন থেকে চারে গিয়েও থিতু হয়ে ফেরার রোগ সারল না সৌম্য সরকারের।
দাসুন শানাকা, ইয়াসির আলির ব্যাটও থাকল নিরব। দলের সব ভার তাই একা নিজের হাতে নিলেন মালান। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টিকে রইলেন, চার-ছয়ে রানের চাকা রাখলেন সচল। ৫৪ বলে ৯ চার ৫ ছক্কায় ঠিক ১০০ রানে অপরাজিত রইলেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। যদিও বাকিদের ব্যর্থতায় ম্যাচ শেষে মলিন মুখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৭০/৮ (রাজাপাকশে ১০, মালান ১০০*, সাব্বির ৫, সৌম্য ২০, শানাকা ১২, ইয়াসির ০, অঙ্কন ৪, রবি ৫, সুমন ০, মুজিব ২* ; রাসেল ২/২৬, ইরফান ২/২৩, আফিফ ১/২৩, রাব্বি ০/১৩, নাহিদুল ০/১৩, মালিক ০/১০, অলক ০/১২, বোপার ১/১৯, জায়েদ ২/২৪)
রাজশাহী রয়্যালস: ১৭.৫ ওভারে ১৭১/৩ (লিটন ২৭, আফিফ ৭৬, মালিক ১, বোপারা ৪৪* , রাসেল ২১* ; মুজিব ১/১৭ , সুমন ০/৩৯, আল-আমিন ২/৪৯, শানাকা ০/২৪, রবি ০/২৪ , সৌম্য ০/১৪ )
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী।
Comments