ধর্ষণের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে সাংস্কৃতিক জোটের মোম শিখা প্রজ্বলন
দেশে সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নারায়ণগঞ্জের ‘সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ’ এর আহ্বায়ক রফিউ রাব্বী বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। সম্প্রতি ধর্ষণের যে চিত্র আমরা সারা দেশে দেখছি তা ভয়াবহতার সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। প্রশাসনের যদি প্রশ্রয় না থাকে তাহলে এভাবে ধর্ষণের বিস্তার ঘটতে পারে না। আজকে আমাদের দেশে নারীরা অনিরাপদ।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের মোম শিখা প্রজ্বলন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিউর রাব্বী বলেন, ‘অনেকেই দাবি করছেন ক্রসফায়ার দিতে হবে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যারা ধর্ষণ করছে তাদের ক্রসফায়ার দেওয়ার অর্থ হচ্ছে এসব ধর্ষকদের গডফাদার রাজনৈতিক অপশক্তি তাদেরকে রক্ষা করা। অপরাধীদের ধরে সঙ্গে সঙ্গে ক্রসফায়ার দিয়ে তাদের পেছনের গডফাদারদের মন্ত্রী-এমপিদের রক্ষা করা হয়েছে। আমরা তাই ক্রসফায়ারের বিরোধিতা করি। তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে সমস্ত বিচার চেয়ে থাকি অধিকাংশ বিচার হয় না। বিচার যা হয় সেটাও রাজনৈতিক কারণে হয় এবং বিচার বন্ধও থাকে রাজনৈতিক প্রয়োজনে। দলের দুর্বৃত্তদের রক্ষা করতে সরকার ছয়-সাত বছর ধরে ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রেখেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই বিচারহীনতার সংস্কৃতি স্বাধীনতার আগেও এতটা ছিল না। আমরা যখন পরাধীন ছিলাম তখনও অপরাধ সংঘটিত হলে আইনের আওতায় আনা হতো।’
তিনি আরও বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত ট্রাইবুনালে বিচার করা হোক। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে ত্বকী হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। সাদনাম সাকির সন্ধান চাই।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিকের জোটের সভাপতি ভবানী সংকর রায়ের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব সাংবাদিক হালিম আজাদ, সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে ত্বকী শহরের শায়েস্তাখান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। ৮ মার্চ সকালে চাড়ারগোপে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ত্বকী হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আট জনই পলাতক। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হয় পাঁচ জন। তাদের মধ্যে আসামি ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের সাত বছর অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত মামলার অভিযোগ পত্র দেওয়া হয়নি।
Comments