আগস্ট-সেপ্টেম্বরেও পারিবারিক নির্যাতন বেড়েছে

মহামারিতে সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর স্বাভাবিক কর্মজীবন শুরু হলেও গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ৪৩১৫ জন নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে শতকরা ৯৯ ভাগই পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে শতকরা ৫৮ জনই স্বামী দ্বারা এবং শিশুরা বাবা-মায়ের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এছাড়া আছে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এই নির্যাতনকারীদের সামাজিক-রাজনৈতিক পরিচয় অনুযায়ী এদের মধ্যে ৮৯ জন অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি সংখ্যকই মাদকাসক্ত ব্যক্তি। এরপরেই আছে ৮২ জন দুস্কৃতকারী ও ৫৩ জন চাকরিদাতা। আরও যারা নির্যাতন করেছে তারা হচ্ছে রাজনৈতিক দলের কর্মী, ছাত্র ও সুপারভাইজার ও সামাজিকভাবে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির মধ্যে নারী নির্যাতন বাড়বার কথা জানিয়েছিল এমজেএফ। তাদের এক জরিপ বলছে, শুধু এপ্রিল মাসেই দেশে ৪২৪৯ নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হন। এখন দেখা যাচ্ছে, দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এলেও নির্যাতন কমেনি।
নতুনভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নারী ও শিশুরা কেমন আছে তা জানার জন্য মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে তার কর্মএলাকার ৫৯টি জেলার ১৭৪ উপজেলায় মোট ৭২,৬৪৫ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে ৪৬৫২১ জন নারী ও ২৬১২৪ শিশু। মোট ৪৪২৮টি পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মানসিক নির্যাতনের শিকার ১৯৮০ জন, শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে ১২৪৪ জনকে, অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার ১১৬৪ এবং যৌন হয়রানির শিকার ৪০ জন। এই দুই মাসে মোট ১০৮১ শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে মেয়েশিশুর সংখ্যা ৬৬৩ আর ছেলেশিশু ৪১৮।
এমজেএফ বলেছে, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে শিশুদের মধ্যে শতকরা ৭৭ ভাগই পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ১৭৬৭ জন নারী ও শিশুদের মধ্যে ৮৭২ জন এর আগে কখনোই সহিংসতার শিকার হননি। শতকরা হিসেবে ৮১ ভাগ শিশু ও ৫৫ জন নারী নতুন আক্রান্ত হয়েছে এই দুই মাসে।
আরও পড়ুন:
এপ্রিলে পারিবারিক সহিংসতার শিকার ৪২৪৯ নারী, প্রথমবার নির্যাতিত ১৬৭২ জন
Comments