করোনার মধ্যেই বড় সমাবেশের ডাক শামীম ওসমানের
করোনা মহামারি ঠেকাতে সভা সমাবেশ এড়িয়ে চলার জন্য সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও আগামী ১০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে বিগত দিনের চেয়েও বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান।
শনিবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের নাভানা ভূঁইয়া বালুর মাঠে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে এই ঘোষণা দেন তিনি। আর ওই বড় সমাবেশের মহড়া হিসেবেই এ কর্মী সভার আয়োজন। এই সভায় অংশগ্রহণকারীদেরও স্বাস্থ্য বিধি মানতে দেখা যায়নি।
আজকের কর্মী সভয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শামীম ওসমান। সরেজমিনে দেখা যায়, খোলা মাঠে মঞ্চ করে কর্মী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশ মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীদের জন্য রাখা চেয়ারগুলোও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেনি। হাত ধোয়া কিংবা জীবাণুনাশক ছিটানোর ব্যবস্থাও ছিল না। মঞ্চের প্রথম সারিতে কয়েকজন নেতাদের মুখে মাস্ক থাকলেও পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা নেতাকর্মীদের মাস্ক ছিল না। অনেকের মতো সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের মাস্ক ছিল থুতনিতে।
এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়াত আলম সানি ও জেলা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের মাস্ক দেখা যায়নি। কেউ সামাজিক দূরত্ব বজায় চলেননি।
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ ইমতিয়াজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনার শুরুতে যে নির্দেশনা ছিল এখনও সেটাই আছে। সবাই মাস্ক ব্যবহার করবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবে, ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিবে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।’
সভা সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলোর বিষয়ে সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জনসমাগমের সব কিছু নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। সেটা জনসমাবেশ, ওয়াজ মাহফিল অথবা বিয়েই হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন নারায়ণগঞ্জে সংক্রামণের হার অনেক কম। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জনের মধ্যেই আছে। যদি জনসমাগম হয় তাহলে সংক্রামণ বাড়তে পারে।’
আজকের কর্মী সমাবেশের সভাপতিত্বকারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এমপি সাহেবের নির্দেশ ছিল একটি কর্মীসভা করবেন। আমাদের থানার নেতাকর্মীদের সঙ্গে সেভাবেই আমরা সভার আয়োজন করি। তবে আমরা চেষ্টা করেছি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং দ্রুত সমাবেশ শেষ করতে।’
অর্ধেকের বেশি নেতাকর্মীর মাস্ক ছিল না এবং অনেকেই সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সমাবেশের শুরুতেই আমরা সবাইকে বলেছি যাতে মাস্ক পরে থাকে। আর যাদের মাস্ক নেই তারা যেন পরে সমাবেশে আসে। তারপরও যারা মাস্ক পরেননি তারা অসচেতন।’
তবে সমাবেশের বক্তব্যে এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, ‘ছোট কর্মী সভা ডাকা হয়েছিল কোভিডের কারণে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন এবং সভায় যারা যাবেন অন্তত মাস্কটা পরে যাবেন। নিজের নিরাপত্তা সবাই নিজে নিবেন।’
উল্লেখ্য জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৪২৭ জনের। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৩২জন এবং মারা গেছেন ১৫০ জন। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ছয় জন।
Comments