খুলনার উন্নয়নের দাবিতে সংগ্রাম কমিটির অবস্থান ধর্মঘট

খুলনার আঞ্চলিক উন্নয়নে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) স্থবিরতা, অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ বন্ধ, উন্নয়ন প্রকল্পে গতিহীনতা, প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে জনভোগান্তি দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতাকর্মীরা।
Khulna development
ছবি: স্টার

খুলনার আঞ্চলিক উন্নয়নে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) স্থবিরতা, অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ বন্ধ, উন্নয়ন প্রকল্পে গতিহীনতা, প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে জনভোগান্তি দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতাকর্মীরা।

আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি কেডিএ’র সামনে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত তারা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন।

অবস্থান ধর্মঘটে বক্তারা বলেন, অপরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প ও নিয়ম বহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। এক সঙ্গে কেডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে। তারা আরও বলেন, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সব অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করা, রূপসা বাইপাস শিপিইয়ার্ড রোড, নিরালা রোড, গল্লামারী থেকে রায়ের মহল ও আড়ংঘাটা থেকে রায়ের মহল সড়কের কাজ দ্রুত শুরু এবং বিদায়ী চেয়ারম্যান আবুল মকিম সরকারের দুর্নীতি-অনিয়ম তদন্ত করতে হবে।

তাদের মতে, কেডিএ’র তৈরি আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোও নির্মাণ করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। সোনাডাঙ্গা ও নিরালা আবাসিক এলাকার গৃহস্থালী বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কেডিএ অ্যাভিনিউ, এমএ বারী সড়ক, মুজগুন্নী মহাসড়কের দুই পাশে বাণিজ্যিক প্লট তৈরি করলেও এর পেছনের বিশাল এলাকার মানুষের মূল সড়কে আসার জন্য কোনো সংযোগ সড়ক তৈরি করেনি।

দৌলতপুর কেডিএর কল্পতরু মার্কেট দীর্ঘ বছরেও চালু করা যায়নি। এখন সেখানে গরু চরে, রূপসা কেডিএ মার্কেটের অবস্থা জরাজীর্ণ এবং নিউ মার্কেটের পিছনের সড়কটি ভাঙাচোরা।

২০০০ সালের পরে কেডিএ যে সংযোগ সড়কগুলো করেছে তা এখন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় বছর দুয়েকের মধ্যে দুইটি সড়কই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।

সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, খুলনার উন্নয়নে কেডিএ খুলনার আরেকটি সেবামূলক জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সঙ্গে কাজের সমন্বয় করে না। এই সমন্বয়হীনতা খুলনার উন্নয়নের একটি অন্তরায়। খুলনায় অপরিকল্পিত নগরায়ন হচ্ছে। পরিকল্পিত রাস্তা-নালা ছাড়াই যেখানে-সেখানে ভবন উঠছে। খুলনায় এ মুহূর্তে দরকার আগামী ৫০ বছরের বিশদ এলাকা পরিকল্পনাসহ একটি মাস্টার প্লান করে জনসম্মুখে প্রকাশ করা। তা না হলে অচিরেই খুলনা নগর একটি বস্তিতে পরিণত হবে।

তিনি আরও বলেন, আধুনিক ও পরিকল্পিত নগর নির্মাণে ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে খুলনার উন্নয়নে কেডিএ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু, গত দুই দশকে খুলনার উন্নয়নে কেডিএর উন্নয়ন কাজ মুখ-ত্থুবড়ে পড়েছে, দৃশ্যমান বড় কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি। এ ছাড়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা, দীর্ঘসূত্রিতা ও নানা অনিয়ম।

এর ফলে খুলনাবাসী প্রত্যাশা অনুয়ায়ী কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অন্য শহর থেকে খুলনা পিছিয়ে পড়ছে।

ধর্মঘটে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, অধ্যাপক মো. আবুল বাসার ও কোষাধ্যক্ষ মিনা আজিজুর রহমান প্রমুখ।

Comments