লোয়াইউনি চা-বাগানে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভে শ্রমিকরা

কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত শ্রমিককে চাকরিতে ফেরানোসহ ১১ দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লোয়াইউনি চা-বাগানের শ্রমিকরা। এর মধ্যে গতকাল মালিকপক্ষ বাগানটি অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা করেছে।
শ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: স্টার

কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত শ্রমিককে চাকরিতে ফেরানোসহ ১১ দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লোয়াইউনি চা-বাগানের শ্রমিকরা। এর মধ্যে গতকাল মালিকপক্ষ বাগানটি অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা করেছে।

সরেজমিনে লোয়াইউনি চা-বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন। আর চা-বাগান ফ্যাক্টরির গেটের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

চাকরিচ্যুত শ্রমিক শ্যামল পাশী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ২০ মে কোনো নোটিশ ছাড়াই সহকারী ব্যবস্থাপক নজরুল ও বাগান চৌকিদার সাধুর নেতৃত্বে তার ফলজ গাছ কেটে ফেলা হয়। প্রতিবাদ করলে পরে সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হলেও বাগান কর্তৃপক্ষ ২২ মে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই তাকে বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্টের ২৬ (ক) ধারায় চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়।

বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি অজিত কৈরি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। আমাদের কিছু না জানিয়ে গতকাল সকাল থেকে বাগানের প্রধান ফটকে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং বাগানের কাজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়।’

বাগানের মূল ফটকে পুলিশি প্রহরা রয়েছে। ছবি: স্টার

‘মঙ্গলবার শ্রমিকরা শ্যামল পাশীকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিবাদ করে। বেলা ১২টায় প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে শ্রমিকরা কাজে যেতে চাইলে লাইন চৌকিদার এসে জানায়, “সাহেব (জিএম) বাগানের কাজ বন্ধ করেছেন।” সেসময় বাগান কর্তৃপক্ষ অফিসে অবস্থান করছিলেন। বাগানের (ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের) মেম্বার সত্য নারায়ণের নেতৃত্বে ১৩ জনের একটি প্রতিনিধিদল জিএম মাবুদ আলীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি তাদের জানান, “বাগান মালিকের নির্দেশে কাজ বন্ধ করা হয়েছে”,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ ও শ্রম অধিদপ্তরের বৈঠক হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয়, যে যেই জমিতে আছে, সেখানেই থাকবে। শ্রমিকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদেরকে সরানো যাবে না।

লংলা ভ্যালির সভাপতি শহীদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, গত ২৩ জুন শ্রমিকরা চাকরিচ্যুত শ্যামল পাশীর চাকরি পুনর্বহালসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্যে বাগান মণ্ডপে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সেসময় শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন লংলা ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জু গোস্বামী, সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার।

শ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: স্টার

এ বিষয়ে বাগানের জিএম মাবুদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘একজন শ্রমিক, তিনি খুব ভালো। কিন্তু, তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা আমাকে দেওয়া হয়েছে। আইনও আছে। আমি সেই আইনে তাকে চাকরিচ্যুত করি। আর যেসব দাবি দাওয়ার কথা বলা হয়েছে সব ভুয়া। গত ২০ মে আমার সহকারী ব্যবস্থাপককে দা নিয়ে তেড়ে এসেছিল সেই শ্রমিক।’

চা-বাগানের সাধারণ সম্পাদক রবি ভূমিজ বলেন, ‘দা নিয়ে আক্রমণের অভিযোগটি সঠিক নয়।’

কুলাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় গত ২৩ জুন সকাল ৮টা থেকে আমরা বাগানে নিয়োজিত আছি। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’

Comments

The Daily Star  | English

BNP places several demands to Yunus, including removal of 'one or two' members of interim govt

BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir led the six-member delegation at the State Guest House Jamuna.

4h ago