সড়কে পরিবহন সংকট, সাভারে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে শুধুমাত্র রিকশা ও পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ আছে। তবে, নির্দেশনা অমান্য করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পণ্যবাহী পরিবহন- ট্রাক, পিকাপভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। এক্ষেত্রে যাত্রীদের গুনতে হয়েছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের রেডিও কলোনি অবরোধ করেন পোশাক শ্রমিকরা। ছবি: সংগৃহীত

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে শুধুমাত্র রিকশা ও পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ আছে। তবে, নির্দেশনা অমান্য করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পণ্যবাহী পরিবহন- ট্রাক, পিকাপভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। এক্ষেত্রে যাত্রীদের গুনতে হয়েছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া।

এদিকে পরিবহন সংকটের কারণে সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য পোশাক শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে দীর্ঘ সময় মহাসড়কের পাশে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

আজ সকাল আটটার দিকে পরিবহন সংকট ও বাড়তি ভাড়ার আদায়ের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের রেডিও কলোনি ও বাজার বাসস্ট্যান্ড অবরোধ করেন কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অপেক্ষমাণ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মহাসড়ক অবরোধে যোগ দেন অন্যান্য পেশার মানুষও। এ সময় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল প্রায় ঘণ্টা খানেক জন্য বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশ সূত্র জানায়, সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সড়কে পরিবহন না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে গণপরিবহন না পেয়ে সকাল আটটার দিকে শ্রমিকেরা সাভার রেডিও কলোনি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সাভার থানা ও হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বোঝালে সকাল নয়টার দিকে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। পরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কয়েকজন পোশাক শ্রমিক বলেন, মহাসড়কে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও কর্মস্থলে যেতে পারেননি তারা। কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্মস্থলে যাতায়াতে গাড়ির ব্যবস্থা করেনি। যেসব গাড়ি পাওয়া যায়, সেগুলোয় কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া দাবি করে, এ কারণে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে করেন।

পোশাক শ্রমিকদের দাবি, গণপরিবহন চালু করে দেওয়া হোক অথবা কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজস্ব যানবাহনের ব্যবস্থা করুক।

লকডাউন দিলে তাদের পোশাক কারখানাও বন্ধ ঘোষণা করা হোক। এধরনের নির্দেশনায় তাদের এই ভোগান্তি হচ্ছে বলেও জানান বিক্ষোভকারীরা।

যোগাযোগ করা হলে, সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান বলেন, ‘সকালে রেডিও কলোনি এলাকায় গণপরিবহনের সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করায় মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। পরে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।’

শ্রমিকদের ভোগান্তির বিষয়ে ঢাকা শিল্পপুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ শুধু দূরের শ্রমিকদের পরিবহনের ব্যবস্থা করে থাকেন। কারখানার আশেপাশের শ্রমিকরা সাধারণত গনপরিবহন ব্যবহার করে কারখানায় যাতায়াত করেন। পরিবহন সংকটের কারণে এসব শ্রমিকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিজিএইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দূরের শ্রমিকদের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিহনের ব্যবস্থা করবে এটাই এখন বহাল আছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাভারের উলাইল এলাকায় অবস্থিত একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তাদের কারখানার অধিকাংশ শ্রমিকই পায়ে হেঁটে কারখানায় যাতায়াত করেন। কিছু শ্রমিক গণপরিবহন ব্যবহার করে কারখানায় যাতায়াত করেন।’

শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের কথা হয়েছে তারা নিজস্ব পরিবহনে ব্যানার লাগিয়ে গণপরিবহন বন্ধ থাকাকালীন কারখানায় যাতায়াত করবে বলেও জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যেসব কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করবে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। আমরা চাই শ্রমিকরা যেন কোনো ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন।’

তিনগুণ ভাড়ার মাধ্যমে যেতে হচ্ছে কর্মস্থলে

রাজধানীর ফার্মগেটে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সাভারের তালবাগ এলাকার আশিকুর রহমান। প্রতিদিন তার অফিসে যেতে খরচ হয় ৪৫ টাকা। আজ তাকে কর্মস্থলে যেতে খরচ করতে হয়েছে ১৩৫ টাকা।

আশিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ সকালে সাভার থেকে তিনিসহ দু’জন একটি ১৫০ টাকা ভাড়ার মাধ্যমে রিকশা করে গাবতলী যান। তারপর সেখানে থেকে ভেঙে ভেঙে রিকশায় ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে ফার্মগেটে পৌঁছান।

Comments

The Daily Star  | English

Public won't tolerate interim govt staying for a long time: Fakhrul

Elected representatives should decide what reforms are necessary, says BNP secretary general

2h ago