আধুনিক জাপান পুনর্গঠনে গুরুত্বারোপ কিশিদার

ফুমিও কিশিদা। ছবি: সংগৃহীত

জাপানকে পুনর্গঠন করা এবং নতুন যুগের চাহিদা পূরণে আধুনিক জাপান পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

আজ সোমবার শপথ গ্রহণের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন কিশিদা।

জাপানের ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান নির্বাচিত হয়ে তিনি জাপানের ১০০তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিপুল ভোটের ব্যবধানে কিশিদা দলের প্রধান নির্বাচিত হন।

দায়িত্ব গ্রহণ করে কিশিদা ২১ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠন করেন। মন্ত্রিসভায় ৩ জন নারী স্থান পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে কিশিদা বলেন, 'জাপান বর্তমানে কোভিড সংকট, বয়স্ক জনসংখ্যা, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে মুক্ত এবং উন্মুক্ত রাখাসহ একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আমাদেরকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগুতে হবে।'

নিজেকে হিরোশিমার লোক উল্লেখ করে কিশিদা বলেন, 'পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাবহারের ভয়াবহতা আমি উপলব্ধি করতে পারি। আমি পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন বিশ্ব গড়ায় কাজ করে যাব।'

জাপানের স্থানীয় সময় রাত ৯টায় শুরু হয়ে সাড়ে ৯টায় শেষ হয় এ সংবাদ সম্মেলন। এতে তিনি তার সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, 'এ মুহূর্তে করোনা মোকাবিলা, করোনা পরবর্তী জাপান পুনর্গঠনে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী উদ্যোগ নেওয়া আমাদের প্রধান কাজ।'

তার সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কিশিদা বলেন, 'পররাষ্ট্রনীতির তেমন কোনো পরিবর্তনের পরিকল্পনা নেই। তবে, আমেরিকার সঙ্গে ৩টি বিষয়ে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে উন্মুক্ত রাখা হবে আমার সরকারের লক্ষ্য।'

এ সময় তিনি নতুন পুঁজিবাজার সৃষ্টি ও বিতরণ কৌশলের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া, খাদ্য উৎপাদন ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনরায় আর্থিক সহযোগিতা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।

নতুন মন্ত্রিসভায় কিশিদা অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য সাবেক সংসদীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাকায়ুকি কোবায়েশিকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।

কিশিদার নতুন মন্ত্রিপরিষদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ছোট ভাই নোবুও কিশি (৬২) প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং তোশিমিতসু মোতেগি (৬৫) পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে স্বপদে বহাল আছেন। এছাড়া, শুনিচি সুযুকি (৬৮) অর্থমন্ত্রী, কোইচি হাগিউদা (৫৮) অর্থনীতি ও বাণিজ্য মন্ত্রী, নোরিকো হোরিউচি (৫৫) ভ্যাকসিন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।

নারীদের মধ্যে সেইকো নোদা (৬১) জন্ম পরিসংখ্যান বিষয়ক ও কারেন মাকিশিমা (৪৪) প্রযুক্তি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। কারেন মাকিশিমা কিশিদা মন্ত্রীসভার সর্বকনিষ্ঠ সদস্য।

কিশিদার মন্ত্রিপরিষদে নতুন মুখ হিসেবে ১৩ জনের মধ্যে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী চিকিৎসায় স্নাতক ৫৩ বছর বয়সী দাইশিরো ইয়ামাগিওয়া আবে প্রশাসনে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ভাইস ট্রেড মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন।

জোটের অন্যতম শরীক দল কোমেইতোর কেবল তেতসুও সাইতোকে (৬৯) ভূমি, অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কিশিদার মন্ত্রিপরিষদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবে সংশ্লিষ্টদের জয় হয়েছে। তিনি নিজেও আবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

কিশিদা প্রধানমন্ত্রীর আসন ধরে রাখতে পারবেন কি না, তা নির্ভর করছে তার স্বল্প সময়ের মন্ত্রিপরিষদের জনপ্রিয়তার ওপর। কারণ, বর্তমান প্রতিনিধি পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে চলতি মাসের ২১ তারিখে। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ফিরে পাবেন।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে ২১ অক্টোবর সংসদ বিলুপ্ত করার করার ঘোষণা দেন ফুমিও কিশিদা।

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

This time our fight is against corruption

From its mammoth rally in Dhaka yesterday, the Jamaat-e-Islami vowed to wage war on corruption if it gets the people’s mandate in the next general election.

4h ago