দ্রুততম দলীয় ফিফটি ও সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড ভারতের
আড়াই দিন গেল বৃষ্টির পেটে। বাংলাদেশের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে ফল আনতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের বিকল্প নেই ভারতের। আগ্রাসনের পাশাপাশি ঝুঁকি নিয়ে রীতিমতো টি-টোয়েন্টি ঘরানায় খেলছে তারা। সেই পথে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলল স্বাগতিক দলটি। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রুততম দলীয় পঞ্চাশ রানের পর দ্রুততম দলীয় শতরানের নতুন দুই কীর্তি গড়েছে তারা।
সোমবার কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩ ওভারেই দলীয় ফিফটি পূর্ণ করেছে ভারত। এর আগে চলতি বছরই ৩০ বছর আগে করা নিজেদের রেকর্ড ভেঙে দ্রুততম দলীয় ফিফটির নতুন রেকর্ড গড়েছিল ইংল্যান্ড। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪.২ ওভারে দলীয় ফিফটি পূরণ করেছিল ইংলিশরা। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে সেই রেকর্ড পেছনে পড়ে গেল।
বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া জারি রেখে এরপর ১০.১ ওভারে দলীয় সেঞ্চুরি পূরণ করে ভারত। অবশ্য দলীয় সেঞ্চুরির আগের কীর্তিটিও ছিল তাদেরই। গত বছর পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েছিল দলটি। ১২.২ ওভারে তারা স্পর্শ করেছিল দলীয় শতরান।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয়। এরপর জবাব দিতে নেমেই তাণ্ডব চালাতে শুরু করেন ভারতের ব্যাটাররা। হাসান মাহমুদের করা প্রথম ওভারেই টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল। ইঙ্গিতটা পরিষ্কার করে দেন তিনি। পরের ওভারে অধিনায়ক রোহিত শর্মা আরও বিধ্বংসী রূপে আবির্ভূত হন। সৈয়দ খালেদ আহমেদের প্রথম দুই বলেই হাঁকান দুটি ছক্কা। এরপর লেগবাইয়ের সুবাদে প্রান্ত বদল হলে সে ওভারে আরও একটি বাউন্ডারি মারেন জয়সওয়াল।
হাসানের করা তৃতীয় ওভারেও ভারতের দুই ওপেনার কচুকাটা করেন হাসানকে। যদিও প্রথম বলেই রোহিতের উইকেট পেতে পারতেন তিনি। ব্যাটের কানা ছুঁলেও জোরালো আবেদন করেননি বাংলাদেশের কেউ। কভার থেকে মেহেদী হাসান মিরাজ শব্দ শুনলেও বোলার ও উইকেটরক্ষক লিটন দাসের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না মেলায় রিভিউ নেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
সেই ভুলের খেসারত কীভাবে দিতে হয় তা পরের বলেই বুঝিয়ে দেন রোহিত। হাঁকান দারুণ এক ছক্কা। আর সে ওভারের শেষ তিন বলে টানা তিনটি বাউন্ডারি মেরে দলীয় ফিফটি পূরণ করেন জয়সওয়াল। যার প্রথমটি ছিল ছক্কা। ফলে তিন ওভারে (নোসহ মোট ১৯ বল) দলীয় ফিফটি তুলে নতুন রেকর্ড গড়ে স্বাগতিকরা।
ভারত বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পরপর চতুর্থ ওভারে স্পিনার আক্রমণে আনেন শান্ত। মিরাজের হাতে বল তুলে দিলে প্রথম বলে বাউন্ডারি হজম করলেও পরের বলেই রোহিতকে বিপাকে ফেলেছিলেন। অবশ্য রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে যান ভারতীয় অধিনায়ক। সেই হতাশা কাটিয়ে ঠিক পরের বলেই তাকে বোল্ড করে দেন মিরাজ। রোহিত থামেন ১১ বলে ২৩ রান করে। ভাঙে ২৪ বলে ৫৫ রানের জুটি।
শুবমান গিলকে নিয়ে এরপর জুটি জমিয়ে ফেলেন জয়সওয়াল। তার আগ্রাসী ব্যাটিং চলতে থাকে। ৩১ বলে ফিফটি পেয়ে যান তিনি, যা ভারতের পক্ষে টেস্টে তৃতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। ১১তম ওভারের প্রথম বলে তিনি হাসানকে ড্রাইভ করে চার মারলে স্কোরবোর্ডে শতরান পূরণ হয়ে যায়। ফলে নতুন দলীয় রেকর্ডের মালিক হয় ভারত।
Comments