অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় জানালেন ফেদেরার
শনিবার ভোরে লেভার কাপে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালকে সঙ্গে নিয়ে শেষবারের মতো কোর্টে নামেন রজার ফেদেরার। ম্যাচটি অবশ্য জিততে পারেননি। পরাজয়ের মাধ্যমে ইতি টানেন তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। বিদায় বেলা আবেগও সামলাতে পারেননি এ কিংবদন্তি। কেঁদে ফেলেন ২০ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী এ তারকা।
অবসরের ঘোষণাটা গত সপ্তাহেই দিয়েছিলেন ফেদেরার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক খোলা চিঠিতে জানান লেভার কাপই হবে তার শেষ টুর্নামেন্ট। ঘোষণা অনুযায়ী নাদালকে সঙ্গে নিয়ে শেষ বারের মতো লড়াই করলেন। তবে ফ্রান্সেস টিয়াফো এবং জ্যাক সকের কাছে হেরে যান তারা।
ম্যাচ শেষে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফেদেরার বলেন, 'আমরা কোনোভাবে এটা কাটিয়ে উঠব। দারুণ একটি দিন ছিল। আমি সবাইকে বলেছিলাম আমি খুশি আছি, দুঃখিত নই। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আমি আরও একবার জুতার ফিতা বেঁধে উপভোগ করেছি, সবকিছুই শেষ রয়েছে।'
বিদায় বেলা অবশ্য ভক্তদের একটি সুখবর দিয়েছেন ফেদেরার, 'একটি বার্তা দিতে চাই, খেলাটির প্রতি আমার ভালোবাসা থাকবে। ভক্তদের জানাতে চাই, আবারও দেখা হবে, বিশ্বের অন্য কোথাও, আলাদা কোনো টেনিস কোর্টে। তবে কবে, কোথায়, কীভাবে হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো পরিকল্পনা করিনি। এমন সব জায়গায় গিয়ে খেলতে চাই, যেখানে আগে কখনো খেলিনি।'
লন্ডনের ওটু অ্যারেনায় ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে টিয়াফো-সক জুটির কাছে ৪-৬, ৭-৬ (৭/২) ও ১১-৯ ব্যবধানে হেরে যান ফেদেরার ও নাদাল জুটি। তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী একত্রে খেলে শেষ লড়াইটা জিতবেন এমন প্রত্যাশা ছিল সবার।
কোনো চাপ ছাড়া ম্যাচটি কেবল উপভোগ করার জন্যই খেলেছেন ফেদেরার, 'আমি এতটা চাপ অনুভব করিনি যদিও আমি ভেবেছিলাম কিছু হতে চলেছে, তবে ম্যাচটি দুর্দান্ত ছিল। এখানে সমস্ত গ্রেটদের ও সমস্ত কিংবদন্তিদের সামনে রাফার সঙ্গে খেলা, ধন্যবাদ।'
অথচ প্রায় দুই দশক ধরে ফেদেরারের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নাদাল। ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছেন ৪০ বার। শুরুতে এগিয়ে থাকলেও পরের দিকে পিছিয়ে ২৪-১৬ ব্যবধানে পিছিয়ে শেষ করেন এ সুইস তারকা। তবে দুইজনে মিলে টেনিস ভক্তদের আনন্দে ভাসিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন ৪২টি।
ফেদেরারের বিদায়ে নাদালও কিছুটা আবেগি হয়ে পড়েন, 'আমাদের এই খেলার ইতিহাসে অনন্য এ মুহূর্তের সঙ্গী হতে পারাটা আমার জন্য বিশেষ সম্মানের। দুজনে একসঙ্গে কত বছর ধরে কত কিছু ভাগ করে নিয়েছি। ফেদেরারের চলে যাওয়া মানে আমার জীবন থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়েরও অবসান ঘটা।'
Comments