১৭৩ রানের ইনিংসে টেস্টের দুয়ারে জাকির

সেঞ্চুরির সুবাস পেয়েছিলেন আগের দিন। শেষদিনে স্পর্শ করে ফেললেন ব্যক্তিগত মাইলফলক। এগোতে থেকে ডাবল সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগালেন। সেটা পূর্ণতা না পেলেও জাকির হাসান ঠিকই বার্তা দিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ দলের নির্বাচকদের।
ঘরের মাঠে আসন্ন টেস্ট সিরিজের অন্তত প্রথমটিতে ভারতের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না তামিম ইকবাল। তিনি ভুগছেন চোটে। রানের মধ্যে নেই মাহমুদুল হাসান জয় ও সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক। ফলে টপ অর্ডারে বিকল্পের খোঁজে আছেন নির্বাচকরা। তাদের নজরে পড়তে সম্ভাব্য সেরাটাই করছেন জাকির। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফুলঝুরি ছুটিয়ে কড়া নাড়ছেন জাতীয় দলের দুয়ারে। ২৪ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার শুক্রবার কক্সবাজারে বাংলাদেশ 'এ' দলের হয়ে হাঁকিয়েছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তাছাড়া, সবশেষ জাতীয় লিগে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে ১৭৩ রানের ইনিংস খেলেছেন ওপেনার জাকির। দীর্ঘ সংস্করণের জন্য উপযোগী মেজাজ দেখান তিনি। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ক্রিজে ছিলেন তিনি। ভারত 'এ' দলের বিপক্ষে ৪০২ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ১৬ চার ও ৩ ছক্কা। আগের দিন তিনি অপরাজিত ছিলেন ৮১ রানে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একটি সূত্রে জানা গেছে, নাটকীয় কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব না ঘটলে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের স্কোয়াডে ডাক পড়বে জাকিরের। চলতি বছর জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ ৪৪২ রান করেন তিনি। তার গড় ছিল ৫৫.২৫। একটি করে ডাবল সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি এসেছিল তার ব্যাট থেকে। এছাড়া, গত বিসিএলেও রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
জাকিরের নৈপুণ্য, লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের দৃঢ়তা ও আলোকস্বল্পতা মিলিয়ে ম্যাচ বাঁচাতে পেরেছে বাংলাদেশ। চার দিনের প্রথম আনঅফিসিয়াল টেস্টের শেষদিনে দ্বিতীয় ইনিংসে তারা করেছে ৯ উইকেটে ৩৪১ রান। কম আলোর কারণে দিনের খেলার দুই ওভার বাকি থাকতে আম্পায়াররা ইতি টানেন ম্যাচের। সফরকারীরা প্রতিবাদ জানালেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ 'এ' দল ১১২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ভারত 'এ' দল নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৫ উইকেটে ৪৬৫ রানে।
তৃতীয় দিনের ১ উইকেটে ১৭২ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল স্বাগতিকরা। নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে শতরানের জুটিকে আরও বাড়িয়ে নিতে থাকেন জাকির। তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করেন মুকেশ কুমার। শান্ত ১৮৭ বলে ৭৭ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। ভাঙে ১৪৮ রানের বড় জুটি। এরপর ঘটে ছন্দপতন। অভিজ্ঞ মুমিনুল ও অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন টিকতে পারেননি।
উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জাকের আলি অনিক লম্বা সময় ক্রিজে ছিলেন। ১৬ রান করতে তিনি খেলেন ৯০ বল। আগের ইনিংসে ফিফটি করা মোসাদ্দেক হোসেন শূন্য করে বিদায় নেন। রানের খাতা খুলতে পারেননি তাইজুল ইসলামও। ৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট খুইয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। একপ্রান্ত আগলে থাকা জাকির এরপর সঙ্গী হিসেবে পান নাঈম হাসানকে। দুজনে কাটিয়ে দেন ১৫ ওভারের বেশি। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে মনে হচ্ছিল, তখনই ফের হারের শঙ্কা উঁকি দেয়।
৫ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার সৌরভ কুমার অল্প সময়ের মধ্যে আউট করেন জাকির ও নাঈমকে। বোল্ড হয়ে থামে জাকিরের ম্যারাথন ইনিংস। এরপর রেজাউর রহমান রাজা ও খালেদ আহমেদ দৃঢ়তার পরিচয় দিলে ড্র হয় ম্যাচ।
Comments