স্পেন: মরুর বুকে শোনা যাবে তারুণ্যের জয়গান?

ক্রীড়াপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ফুটবল বিশ্বকাপ। মরুর বুকে এই মহাযুদ্ধে কারা হবে চূড়ান্ত বিজয়ী, সেই নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। এই লড়াইয়ে আছে স্পেনও।
ছবি: সংগৃহীত

ক্রীড়াপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ফুটবল বিশ্বকাপ। মরুর বুকে এই মহাযুদ্ধে কারা হবে চূড়ান্ত বিজয়ী, সেই নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। এই লড়াইয়ে আছে স্পেনও। অভিজ্ঞ তারকাদের সঙ্গে দারুণ সম্ভাবনাময় কিছু তরুণ তুর্কির সংযোজনে তাদের রয়েছে একটি ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াড। তবে পেদ্রি-গাভি-আনসু ফাতিরা জ্বলে না উঠলে কাতারে কঠিন হবে লা ফুরিয়া রোজাদের যাত্রা।

১২ বছর আগে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা-জাভি-সার্জিও রামোসদের হাত ধরে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল স্পেন। সেই দলের মাত্র একজন সদস্য এবার কোচ লুইস এনরিকের দলে জায়গা পেয়েছেন। তিনি ৩৪ বছর বয়সী সার্জিও বুসকেতস। নিজের সেরা সময় অবশ্য বহু আগেই পার করে এসেছেন বার্সেলোনার এই তারকা মিডফিল্ডার।

সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক রামোসকে নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তাকে না ডেকে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন এনরিকে। ৩৬ বছর বয়সী পিএসজি ডিফেন্ডার নিশ্চিতভাবেই বাড়াতেন স্প্যানিশ ডিফেন্সের ধার। তিনি না থাকায় দুই অভিজ্ঞ সেনা জর্দি আলবা ও দানি কারভাহাল থাকবেন এই বিভাগের নেতৃত্বে। গোলরক্ষক পজিশনেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন স্পেন বস। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দাভিদ দে হেয়াকে দলে রাখেননি তিনি।

মিডফিল্ডে পেদ্রি-গাভি মতো তরুণ সম্ভাবনাময় জুটি থাকলেও এমন বড় মঞ্চের চাপ সামলানোর তেমন অভিজ্ঞতা নেই তাদের। পেদ্রি গত বছর ইউরো খেললেও কোনো গোল বা অ্যাসিস্ট করতে পারেননি। বুসকেতস-কোকে-রদ্রিদেরই তাই সামনে অবস্থান নিয়ে সঠিক পথ দেখাতে হবে অনুজদের। আক্রমণভাগেও অনেকটা একই চিত্র। ফেরান তোরেস-ফাতিরা প্রয়োজনের সময় যেন জ্বলে ওঠেন, সেটা চাইবেন এনরিকে। কারণ, আলভারো মোরাতা-মার্কো আসেনসিওরা নেই সেরা ফর্মে। ফলে প্রায় তারুণ্য নির্ভর একটি দল নিয়েই কাতারে পাড়ি জমাচ্ছে স্পেন।

নতুন তারকাদের নিয়ে বরাবরই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আসছেন এনরিকে। চলতি বছরের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের নিয়ে নিজের মুগ্ধতা জানিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ, 'এই বাচ্চাগুলো সত্যিই সাহসী, যারা এত অল্প বয়সে এমন গর্ব ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে নিজেদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। আমি (সাহসী) নই। আমি যেটা তা হলো ভাগ্যবান, এত দারুণ খেলোয়াড়দের আমার অধীনে পেয়েছি।'

অতীত বিশ্বকাপগুলোতে স্পেন

১৯৩৪ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে সুযোগ পায় লা ফুরিয়া রোজারা। আর ১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কখনোই বাছাইপর্বে পা হড়কায়নি তাদের। মাঝে ২০১০ সালে স্পেনের সোনালী প্রজন্মের হাতে ওঠে প্রথম বিশ্বকাপ। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সবশেষ দুই আসরে হতাশ হতে হয় স্প্যানিশদের। যথাক্রমে গ্রুপ পর্ব ও শেষ ষোলোতে থামে তাদের যাত্রা। 

যেভাবে আগমন কাতার বিশ্বকাপে

ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইপর্বে গ্রুপ সেরা হয়েই দাপটের সঙ্গে বিশ্বকাপের মূল পর্বের টিকিট নিশ্চিত করেছে স্পেন। নিকট অতীতে দুটি সাফল্যের খুব কাছে গিয়ে ফিরে আসার তিক্ত স্বাদও নিতে হয়েছে তাদের। ২০২০ ইউরোর সেমিফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে ইতালির বিপক্ষে হারার পর গত উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে পরাস্ত হয় তারা।

স্পেনের বিশ্বকাপ দল

গোলরক্ষক: উনাই সিমন (অ্যাথলেতিক বিলবাও), রবার্ত সানচেজ (ব্রাইটন), দাভিদ রায়া (ব্রেন্টফোর্ড);

ডিফেন্ডার: সিজার আজপিলিকুয়েতা (চেলসি), দানি কারভাহাল (রিয়াল মাদ্রিদ), আয়মেরিক লাপোর্তে (ম্যানচেস্টার সিটি), এরিক গার্সিয়া (বার্সেলোনা), জর্দি আলবা (বার্সেলোনা), পাউ তোরেস (ভিয়ারিয়াল), হোসে গায়া (ভ্যালেন্সিয়া), হুগো গুইয়ামন (ভ্যালেন্সিয়া);

মিডফিল্ডার: সার্জিও বুসকেতস (বার্সেলোনা), রদ্রি (ম্যানচেস্টার সিটি), গাভি (বার্সেলোনা), পেদ্রি (বার্সেলোনা), কার্লোস সোলার (প্যারিস সেইন্ট জার্মেই), কোকে (অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ), মার্কোস ইয়োরেন্তে (অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ);

ফরোয়ার্ড: ফেরান তোরেস (বার্সেলোনা), আলভারো মোরাতা (অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ), মার্কো আসেনসিও (রিয়াল মাদ্রিদ), আনসু ফাতি (বার্সেলোনা), নিকো উইলিয়ামস (অ্যাথলেতিক বিলবাও), পাবলো সারাবিয়া (প্যারিস সেইন্ট জার্মেই), ইয়েরেমি পিনো (ভিয়ারিয়াল), দানি ওলমো (আরবি লাইপজিগ)।

Comments

The Daily Star  | English

Khagrachhari violence: 3 dead, 4 sent to CMCH 'with bullet wounds'

Three indigenous people died of their injuries at a hospital in Khagrachhari yesterday and early today, hours after arson attacks and violence in the district

1h ago