আখাউড়ায় আইনজীবীর বিরুদ্ধে প্রতিবেশীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

এক যুগ আগে একই ব্যক্তির বাম পা ও বাম হাত ভেঙে দিয়েছিল ওই আইনজীবীর পরিবারের সদস্যরা।
আখাউড়ায় নিহত আবুল হোসেনের পরিবারের সদস্যদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রতিবেশী বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার এক যুগ আগে একই ব্যক্তির বাম পা ও বাম হাত ভেঙে দিয়েছিল ওই আইনজীবীর পরিবারের সদস্যরা।

গতকাল রোববার আখাউড়ার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে ওই বৃদ্ধ, তার ভাই এবং স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে আজ সোমবার ঈদের দিন সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত আবুল হোসেন (৬০) রুটি গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা। অভিযুক্ত আইনজীবী রুবেল মিয়া একই গ্রামের বাসিন্দা ও নিহতের প্রতিবেশী সামাদ মিয়ার ছেলে।

নিহত আবুল হোসেনের বড় মেয়ে পাখী আক্তার জানান, জমির আইল কাটাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালে সামাদ মিয়ার সঙ্গে তার বাবা-চাচাদের সংঘর্ষ হয়েছিল। সেসময় সামাদ মিয়া ও তার ছেলেরা আবুল হোসেনের বাম হাত ও বাম পা ভেঙে দিয়েছিল। পরে এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল৷ এতে সামাদ ও তার ছেলেরা আবুল হোসেনের পরিবারের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল।

নিহতের স্ত্রী হারুণা বেগম জানান, গত রোববার ঈদের আগের দিন কোরবানির পশু নিয়ে সামাদ মিয়া ও তার ছেলেরা আবুল হোসেনের ছোট ভাই আবু সাঈদকে উপহাস করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আবু সাঈদের চোখ উপড়ে ফেলার হুমকি দেয় সামাদ মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া। হুমকির ব্যাপারে কথা বলতে গেলে আবুল হসেনকে রামদা দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে রুবেল। বাড়ির কাছেই এ ঘটনা দেখতে পেয়ে আবুল হোসেনকে বাঁচাতে তার ভাই, স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়েরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে অন্য প্রতিবেশীরা তাদেরকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার সকালে আবুল হোসেন মারা যান। এর আগে, তার মেয়ে মুক্তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনাস্থলে আসা ধরখার পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবুল কালাম জানান, ঘটনার পরপর সামাদ মিয়া ও তার ছেলেরা কুরবানির পশুসহ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, 'আবুল হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অভিযুক্ত যুবক রুবেলসহ অন্যদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি চলছে।'

Comments