কক্সবাজার: দীর্ঘতম সৈকত, না বৃহত্তম ভাগাড়?

দেশের অন্যান্য শহরের মতো কক্সবাজারও দ্রুত বর্ধিত হচ্ছে। কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় এ গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

দেশের অন্যান্য শহরের মতো কক্সবাজারও দ্রুত বর্ধিত হচ্ছে। কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় এ গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।

বিশেষ করে পরিচ্ছন্নতা সেবার ক্ষেত্রে খুবই পিছিয়ে আছে শহরটি। সঠিক পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিদিনের বিপুল পরিমাণ আবর্জনা জমা করা হচ্ছে শহরের কেন্দ্রস্থলের একমাত্র ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। এতে শহরের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।

দুর্ভাগ্যবশত, দেশের বেশিরভাগ শহরের মতো এই পর্যটন শহরটিও অপরিকল্পিত নগরায়নের শিকার। খালি জায়গা পেলেই আবাসিক হোটেল বা ভবন গড়ে উঠছে। রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো পুকুর ভরাট করে ফেলছে নিমিষেই।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ছোট শহরে ইতোমধ্যে ৭৫০টি আবাসিক হোটেল ও ২৫০টি রেস্তোরাঁ আছে। কোনো মহাপরিকল্পনা না মেনেই এসব হয়েছে। আদৌ কোনো মহাপরিকল্পনা আছে কি না, তাও নিশ্চিত না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্ভবত সমস্যার ভয়াবহতা সম্পর্কে কোনো ধারণাই রাখে না।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, কক্সবাজারের জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ। এখানে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি পর্যটক আসেন। সুতরাং, এ শহর ও এর আশেপাশে পর্যটকদের কারণে প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য তৈরি হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পৌরসভা প্রতিদিন গড়ে পৌর এলাকা থেকে ৯০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে, পর্যটন মৌসুমের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তা ১৩০ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। লক্ষণীয় বিষয় হলো: সংগৃহীত বর্জ্যের পরিমাণ ৯০ টন। যে পরিমাণ বর্জ্য অসংগৃহীত অবস্থায় পড়ে থাকে, তার পরিমাণ কারো জানা নেই।

২০২১ সালে এ শহরের বর্জ্য উৎপাদন আগে অনুমান করা পরিমাণের প্রায় দ্বিগুণ। বরাবরের মতো এ আবর্জনা সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার পর্যাপ্ত কর্মী নেই।

এখানেই শেষ নয়। ছোট এই শহরটিতে প্রতিদিন প্রায় নিষ্কাশিত ১৪০ টন পয়ঃবর্জ্যের মধ্যে মাত্র ২০ টন পরিশোধন করা হয়।

এমন পর্যটন শহরের জন্য এটি খুবই হতাশাজনক। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত বলে দাবি করা হয়। আমরা জানি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শহরটির জন্য একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করছে।

কিন্তু, এর মধ্যেই অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে শহরের পরিবেশ নষ্ট হতে শুরু করেছে। অবিলম্বে এর সমাধান না করা হলে, এটি অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।

ব্যয় যাই হোক না কেন, কক্সবাজারের জন্য উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। সুন্দর প্রাচীন এই জনপদটিকে নোংরা ও দুর্গন্ধময় দেখতে না চাইলে, কোনো খরচই আসলে খুব বেশি খরচ নয়।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

2h ago