বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়লে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সতর্কবার্তার দিকে সরকারকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানাই।
ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সতর্কবার্তার দিকে সরকারকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানাই।

সংস্থাটি সম্প্রতি বলেছে, এখনই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো আত্মঘাতী হবে। কারণ, এতে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে এবং তাতে করে রপ্তানিমুখী পণ্যের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ক্ষেত্রে চলমান অস্থিতিশীলতার মধ্যে যখন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসছে, এ অবস্থায় রপ্তানি কমে আসা মানে দেশের অর্থনীতিকে ভয়াবহ ক্ষতির দিকে নিয়ে যাওয়া।

রপ্তানি কমে এলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে প্রভাব পড়বে, তাতে আমাদের ব্যবসা খাতে ব্যাপক ধস নামার আশঙ্কা সৃষ্টি হবে।

শিল্পখাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের ওপর চাপ বেড়ে যায় এবং এতে মানুষের প্রকৃত আয় আরও কমে আসে। যেহেতু নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ ইতোমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছে, এ অবস্থায় সরকারের উচিত মুদ্রাস্ফীতি যেন আর না বাড়ে তা নিশ্চিত করা এবং এটাকেই সরকারের এক নম্বর অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা উচিত।

সরকারকে বুঝতে হবে, বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে যে মুদ্রাস্ফীতি তৈরি হবে, তাতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বেড়ে যাবে। বিষয়টি সার্বিক পরিস্থিতিকে বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে সরকারের কাছে আরেকটি বিকল্প আছে। এটা নিয়ে ব্যবসায়ীরা যেমন বলছেন, বিশেষজ্ঞরাও পরামর্শ দিয়েছেন যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত দ্রুত রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বন্ধ করা এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে আমূল পরিবর্তন আনা।

রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো আমাদের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে অকার্যকর এবং এটি রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর পরিবর্তে আমাদের আরও দক্ষতা অর্জন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনা উচিত। এ সিদ্ধান্ত জনগণ পছন্দ না করলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি অপরিহার্য। এ ছাড়া, বর্তমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় সরকারের উচিত অবৈধ সংযোগ বন্ধ করা এবং বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহারের দিকে নজর দেওয়া।

দেশে বর্তমানে জ্বালানি সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো মানে, তা সংকটকে আরও বাড়িয়ে তোলা। ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা পরিষ্কারভাবে তা তুলে ধরেছেন।

অতএব, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ালে তা দেশের অর্থনীতিতে আরও অস্থিতিশীলতা ও ব্যাপক জনভোগান্তি তৈরি করতে পারে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত এর পরিবর্তে বিকল্প উপায় বেছে নেওয়া।

Comments

The Daily Star  | English
Sundarbans fire: Under control, not entirely doused yet

Sundarbans: All fires in 23 years were confined to only 5pc area

All fires in the Sundarbans over the last 23 years took place in just five percent area of the mangrove forest under the east forest division, said officials concerned.

19h ago