শিল্পখাত

স্যুট রপ্তানিতে বিশ্বে বাড়ছে বাংলাদেশের সুনাম

এক দশক আগে বাংলাদেশে রপ্তানিমুখী স্যুট তৈরির কারখানার সংখ্যা ছিল এক থেকে দুটি। বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য স্যুটের প্রধান উৎসস্থল ছিল চীন ও ভিয়েতনাম।

এক দশক আগে বাংলাদেশে রপ্তানিমুখী স্যুট তৈরির কারখানার সংখ্যা ছিল এক থেকে দুটি। বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য স্যুটের প্রধান উৎসস্থল ছিল চীন ও ভিয়েতনাম।

প্রযুক্তি ও দক্ষ জনবলের অভাবের বাংলাদেশ এই মূল্য সংযোজন পোশাক সামগ্রী উৎপাদনে পিছিয়ে ছিল।

বর্তমানে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক স্বনামধন্য খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডের জন্য উচ্চ-মূল্যের স্যুটের প্রধান সরবরাহকারী বাংলাদেশ। এই খাতে বিনিয়োগ ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বে ১৬০ বিলিয়ন ডলারের বাজার এখন বাংলাদেশের দখলে।

রপ্তানিমুখী স্যুট তৈরির কারখানার সংখ্যা বর্তমানে ১৩টি যা বছরে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে।

এনার্জিপ্যাক ফ্যাশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশীদ এই মূল্য সংযোজন পোশাক তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ২০০৭ সালে গাজীপুরে কারখানা স্থাপন করেন। বর্তমানে তিনি প্রতি বছর ৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন পিস স্যুট রপ্তানি করে ৫৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেন।

খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলোর অর্ডার বাড়ায় এই উদ্যোক্তা ফেব্রুয়ারি থেকে উত্পাদন ক্ষমতা প্রসারিত করতে যাচ্ছে। সম্প্রসারণের পর প্রতিদিন অতিরিক্ত আড়াই হাজার স্যুট তৈরি হবে। বর্তমানে কারখানাটিতে প্রতিদিন ১৬ হাজার স্যুট তৈরি হয়।

রশিদের কারখানায় উত্পাদিত স্যুটের দাম ৩০০ ডলার বা তার বেশি।

হুমায়ুন রশীদ জানান, মধ্যম সারির স্যুটের রপ্তানি মূল্য ১৫০ থেকে ৩০০ ডলারের মধ্যে। তুলনামূলক একটু নিম্ন সারির স্যুটের রপ্তানি মূল্য ৯৯ থেকে ১৫০ ডলারের মধ্যে। তার ক্লায়েন্টদের মধ্যে ইউরোপীয় অনেক নামি ও মার্কিন খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ড রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের একটি প্রধান পোশাকের খুচরা বিক্রেতার কান্ট্রি ম্যানেজার বলেন, ১০ বছর আগে চাহিদা বেশি হওয়ায় ব্রিটিশ ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশে স্যুট তৈরির কারখানা খুঁজছিল।

এই কর্মকর্তা বলেন, 'বর্তমানে আমার কোম্পানির জন্য বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় স্যুটের উৎসে পরিণত হয়েছে।'

এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার করায় তিনি স্থানীয় নির্মাতাদের কৃতিত্ব দিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতারা প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার সম মূল্যের স্যুট ও ট্রাউজার কেনেন। বাংলাদেশ থেকে তাদের মোট আমদানিকৃত মূল্যের পরিমাণ ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, 'স্যুট খাতে ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধির জন্য অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।'

তিনি বলেন, 'ভলিউমের দিক থেকে আমরা ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি রপ্তানি করি। কিন্তু আমরা ৫টি মৌলিক পোশাকের আইটেমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় মূল্য কম।'

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, চাহিদা বেশি থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় টেক্সটাইল মিলারদের স্যুট তৈরিতে ব্যবহৃত কাপড় সরবরাহ করার তেমন সক্ষমতা নেই। ফলে, নির্মাতারা মূলত চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে স্যুটের কাপড় আমদানি করে।

চাহিদা কমে যাওয়ায় করোনাভাইরাস মহামারির চূড়ান্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে স্যুট, ব্লেজার এবং অন্যান্য ওভেন পোশাক আইটেমগুলোর উত্স কমে গেছিল। সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণে ব্যবসা এখন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।

ব্রিটিশ খুচরা বিক্রেতার কান্ট্রি চিফ বলেন, 'ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতির পুনরায় সচল হওয়ায় পশ্চিমা বাজারেও স্যুট ব্যবসা বাড়তে চলেছে।'

তিনি বলেন, 'তবে, কোভিড -১৯ পরিস্থিতির অবনতি হলে, পোশাকের ব্যবসা, বিশেষ করে স্যুটের ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়বে।'

অনুবাদ করেছেন সুমন আলী

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

3h ago