গেইল-ব্রাভোর ‘বিদায়ী ম্যাচে’ ওয়ার্নারের ব্যাটে জিতল অস্ট্রেলিয়া

শেষটায় সেরা সময়ের খানিকটা ঝলক দেখিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। কিন্তু ঠিকমতো জ্বলে উঠার আগেই নিভেছেন। সতীর্থদের অভিবাদনে ছেড়েছেন মাঠ। ঘোষণা দেননি, তবে ২২ বছরের বর্ণময় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখানেই থামল বলে আভাস স্পষ্ট। ঘোষণা দেওয়া ডোয়াইন ব্রাভোও নিজের শেষ ম্যাচে ছিলেন মলিন। এমন আবেগময় দিনে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডের ব্যাটে পাওয়া মাঝারি পুঁজি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে লড়াই জমাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ডেভিড ওয়ার্নার-শন মার্শের ব্যাটে অজিরা জিতেছে অনায়াসে।

শনিবার আবুধাবিতে সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।  এতে করে সেমিফাইনালের পথটা অনেকটাই পরিষ্কার করে রেখেছে অজিরা। আগে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৫৭ রান ২২  বল আগেই পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

Two absolute greats of the format #T20WorldCup | #AUSvWI pic.twitter.com/kix80x2QTB

— T20 World Cup (@T20WorldCup) November 6, 2021

দলকে জেতাতে ৫৫ বলে ৮৯ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ওয়ার্নার। ৩২ বলে ৫৩ আসে মার্শের ব্যাট থেকে।

অস্ট্রেলিয়ার জয়ে লাভ হয়েছে বাংলাদেশেরও। অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া পরের বিশ্বকাপে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের।

কারণ এই হারে আট থেকে নয়ে নেমে গেছে ক্যারিবিয়ানরা। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা আটে থাকা দলগুলোই সরাসরি খেলবে সুপার টুয়েলভে। বাকি চার দলকে প্রথম রাউন্ডের বাধা পেরিয়ে আসতে হবে।

১৫৮ রান তাড়ায় নেমে তেমন কোন সমস্যাই হয়নি অস্টেলিয়ার। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে তাদের রানের চাকা চলে তরতরিয়ে। উড়ন্ত শুরুর পর অ্যারন ফিঞ্চ বিদায় নেন চতুর্থ ওভারে। এরপর আর ম্যাচে ফেরার কোন অবস্থাই আসেনি ক্যারিবিয়ানদের।

ছন্দে ফেরা ওয়ার্নার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন, মার্শ দিতে থাকেন সঙ্গ। আগ্রাসী ওয়ার্নার চার-ছয়ে খেলা করে দেন সহজ। দুজনেই তুলে নেন ফিফটি। প্রতিপক্ষের রান আরও বেশি হলে সেঞ্চুরিরও সুযোগ ছিল ওয়ার্নারের।

১২৪ রানের জুটির পর ৩২ বলে ৫৩ করা মার্শ যখন আউট হন ম্যাচ তখন জেতার একদম কাছে অজিরা। শেষবারের মতো বল করতে এসে মার্শকে আউট করে বিনোদন দেন গেইল।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে যাওয়া ক্যারিবিয়ান ইনিংসে আরও একবার আগের সেই দিন ফেরানোর আভাস দিয়েছিলেন গেইল। এভিন লুইসের মাঝেও ছিল তেমন ছন্দ। কিন্তু উড়ন্ত শুরুর পর হুট করেই পথ হারায় তারা।

৯ বলে দুই ছক্কায় ১৫ করে প্যাট কামিন্সের বলে প্লেইড ইন হয়ে যান গেইল। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাট তুলে মানুষের অভিবাদন গ্রহণ করেন। তাকে বুকে জড়িয়ে নেন সতীর্থরা।

তিন-চারে নিকোলাস পুরান ও রোস্টন চেজ ফেরেন তড়িঘড়ি। এভিন লুইস রান বাড়াচ্ছিলেন। থিতু হয়ে বড় ইনিংসের দিকে যেতে পারতেন। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার লেগ স্পিনে তার লড়াই থামে ২৬ বলে ২৯ রানে। থিতু হয়ে টানতে পারেননি শেমরন হেটমায়ারও।

তবে অধিনায়ক পোলার্ডের ৩১ বলে ৪৪ আর আন্দ্রে রাসেলের ৭ বলে ১৮ রানে দেড়শো ছাড়ায় দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বসেরারা। কিন্তু রানে ভরা উইকেটে ওই পুঁজি যথেষ্ট ছিল না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ:  ২০ ওভারে ১৫৭/৭  (গেইল ১৫, লুইস ২৯, পুরান ৪, চেজ ০, হেটমায়ার ২৭, পোলার্ড ৪৪, ব্রাভো ১০, রাসেল ১৮*, হোল্ডার ১* ; স্টার্ক ১/৩৩, হ্যাজেলউড ৪/৩৯, কামিন্স ১/৩৭, ম্যাক্সওয়েল ০/৬, মার্শ ০/১৬)

অস্ট্রেলিয়া: ১৬.২ ওভারে ১৫৮/২ (ওয়ার্নার ৮৯*, ফিঞ্চ ৯, মার্শ ৫৩, ম্যাক্সওয়েল  ০* ;আকিল ১/২৯, চেজ ০/১৭, হোল্ডার ০/২৬,  ব্রাভো ০/৩৬ , ওয়ালশ ০/১৮, রাসেল ০/২৫, গেইল ১/৭  )

ফল:  অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী।