পাপুয়া নিউগিনিকে গুঁড়িয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে অনেক পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রত্যাশিতভাবেই বাংলাদেশের ম্যাচ হয়েছে একপেশে। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের করা ১৮১ রানের জবাবে মাত্র ৯৭ রানে গুটিয়ে গেছে পাপুয়া নিউগিনি। ৮৪ রানের বিছাল জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের সুপার টুয়েলভ।
Bangladesh cricket team
ছবি: আইসিসি টুইটার

স্কটল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরে শঙ্কার কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের আকাশ। ওমানের বিপক্ষেও ম্যাচের একটা পর্যায় পর্যন্ত সেই মেঘ ছিল ঘন। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই চাপ জেতার পর পাপুয়া নিউগিনিকে আর পাত্তা দিল না মাহমুদউল্লাহর দল। বড় জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে পা রাখার ম্যাচে সাকিব আল হাসান দেখালেন অলরাউন্ড নৈপুণ্য। আগ্রাসী ইনিংস খেলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন অধিনায়কও।

বৃহস্পতিবার ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে অনেক পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রত্যাশিতভাবেই বাংলাদেশের ম্যাচ হয়েছে একপেশে। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের করা ১৮১ রানের জবাবে মাত্র ৯৭ রানে গুটিয়ে গেছে পাপুয়া নিউগিনি। ৮৪ রানের রেকর্ড জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের সুপার টুয়েলভ। এখন ওমান-স্কটল্যান্ড ম্যাচে ফল যাই হোক না কেন 'বি' গ্রুপের সেরা দুইয়ে থাকছেই বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টিতে এটাই রানের ব্যবধানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়। এর আগে দলের সবচেয়ে বড় জয় ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১২ সালের জুলাইতে বেলফাস্টে আইরিশদের ৭১ রানে হারিয়েছিল তারা। 

Shakib Al Hasan

৩৭ বলে ৪৬ রান করার পর ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সাকিবই ম্যাচসেরা । ২৮ বলে ৫০ করে অবদান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। ৬ বলে অপরাজিত ১৯ করার পর বল হাতে ২১ রানে ২ উইকেট নিয়ে অবদান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের।

বিশাল রান তাড়ায় নেমে প্রথম দুই ওভার টিকে থাকার পর তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় পিএনজি। সাইফউদ্দিনের বলে এলবিডব্লিউতে কাটা পড়েন লেগা সিয়াকা। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে কিপার নুরুল হাসান সোহানের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন অধিনায়ক আসাদ ভালা।

পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই দুই উইকেট পেয়ে যান সাকিব। তার প্রথম বলেই উড়াতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে নাঈম শেখের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন চার্লস আমিনি। তিন বল পরই সাইমন আটাই ক্যাচ দেন স্কয়ার লেগে। ১৪ রানেই ৪ উইকেট খুইয়ে বসে সহযোগী সদস্য দেশটি।

খানিক বিরতি দিয়ে আবার উইকেট। সাকিবকে উড়িয়ে মারার বিলাসিতা দেখানো সেসে বাউও ক্যাচ দেন বাউন্ডারি লাইনে। পরে হিরি হিরিও সাকিবের সাদামাটা এক বল ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় নেন।

মাঝে শেখ মেহেদীর শিকার হয়ে বিদায় নেন নরমান ভানুয়া। ১১ রান করে চাঁদ সপার বোল্ড হন সাইফউদ্দিনের ইয়র্কারে। আটে নামা কিপলিন ডরিগা একা লড়ে কিছু রান করে দলের হারের ব্যবধানই কমিয়েছেন কেবল। ৩৪ বলে ৪৬ করে একপাশে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

Mahmudullah
ছবি: আইসিসি টুইটার

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন নাঈম শেখ। কিপার কিছুটা বেশি পেছনে থাকায় এজ হওয়া বল হাতে নিতে পারেননি। কাবুয়া মরেয়ার পরের বলেই অবশ্য তার ইতি। মিড উইকেট দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনের কাছে থাকা একমাত্র ফিল্ডারের হাতে।

আগের ম্যাচে ফিফটি করা নাঈম থামেন ০ রানে। রানে না থাকা লিটন দাস এদিন শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। এক-দুই করে রান বাড়াচ্ছিলেন। চাঁদ সপারের বলে স্লগ সুইপে ছক্কা মারার পর বেশ আত্মবিশ্বাসীও লাগছিল তাকে।

গ্যাপ বের করে লিটন রানের চাকা রাখেন সচল। তিনে নামা সাকিব দেখেশুনে শুরু করেন। দ্বিতীয় উইকেটে লিটন-সাকিবের জুটিতে আসে ৫০ রান। থিতু হয়ে যাওয়া লিটনের বড় রানের তখন আভাস। কিন্তু পাওয়ার প্লের পর বল করতে আসা ভালাকে স্লগ সুইপে উড়াতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে বাউয়ের নিচু ক্যাচে পরিণত হন।

অফ ফর্মে থাকা মুশফিকুর রহিম এদিনও করেন হতাশ। আটাইয়ের বলে পুল করে বাউন্ডারি লাইনে ধরা দেন ৮ বলে ৫ করা এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।

শুরুতে সময় নিলেও সাকিব নিজেকে মেলে ধরেন সময়ের সঙ্গেই। বড় বড় ছক্কায় উড়তে শুরু করেছিলেন তিনি। তবে ফিফটি কাছে গিয়ে আমিনির দারুণ ক্যাচে পরিণত হন। ৩ ছক্কায় ৪৬ করেন তিনি।

পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহ এদিন ছিলেন শুরু থেকেই আগ্রাসী। একাদশ ওভারে নেমে আদর্শ পরিস্থিতি পেয়ে তোলেন ঝড়। আফিফ হোসেনকে একপাশে রেখে ২৭ বলেই অধিনায়ক পৌঁছান ফিফটিতে। এরপরই অবশ্য ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি।

২৮  বলের ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ ৩ চারের সঙ্গে মারেন ৩ ছক্কা। আফিফ শুরুতে সময় নিয়ে পরে কিছু বাউন্ডারি পেয়ে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত থাকেননি। ১৯তম ওভারে তার বিদায় হয় ১৪ বলে ২১ করে।

শেষ ওভারে ঝড় তুলে দলের রান ১৮০ ছাড়িয়ে নেন সাইফউদ্দিন। তার ১ ছয় ও ২ চারে শেষ ওভার থেকে বাংলাদেশ তোলে ২০ রান। বিশাল সেই পুঁজি প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনির জন্য পরে হয়ে গেল পাহাড়সম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮১/৭ ( নাঈম ০, লিটন ২৯, সাকিব ৪৬, মুশফিক ৫, মাহমুদউল্লাহ  ৫০, আফিফ ২১, সোহান ০, সাইফউদ্দিন ১৯*, শেখ মেহেদী ২*; মরেয়া ২/২৬, রাভু  ২/৪০,  চাঁদ ০/৫৩, বাউ ০/২০, আসাদ ২/২৬, আমিনি ০/৯, আটাই ১/৬ )

পাপুয়া নিউগিনি: ১৯.৩ ওভারে ৯৭ (সিকা ৫, আসাদ ৬, আমিনি ১, বাউ ৭, আটাই ০, হিরি ৮, ভানুয়া ০, ডরিগা ৪৬*, চাঁদ ১১, মরেয়া ২, রাভু  ৫; সাইফউদ্দিন ২/২১, মোস্তাফিজ ০/৩৪, তাসকিন ২/১২, সাকিব ৪/৯, শেখ মেহেদী ১/২০)।

ফল: বাংলাদেশ  ৮৪  রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ:  সাকিব আল হাসান।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

7h ago