কুবির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সব শিক্ষার্থীকে শোকজ

সেশন জটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সব শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রোববার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এই নোটিশ দেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের বন্ধ, বুধবার বিকেলের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ
ছবি: সংগৃহীত

সেশন জটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সব শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রোববার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এই নোটিশ দেন।

নোটিশে বলা হয়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গত ১ সেপ্টেম্বর ও এর পরে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও বিভাগীয় শিক্ষকদের নিয়ে নানা ধরনের কটূক্তি ও বিব্রতকর মন্তব্য করেছেন। এমনকি শিক্ষকের সঙ্গে একাডেমিক অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ভাষ্য উন্মুক্তভাবে উপস্থাপন এবং স্ক্রিনশট শেয়ার করে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এটি আপনারা করতে পারেন কি না সে বিষয়ে বিভাগ জানতে চায়। বিভাগীয় শিক্ষকরা অবশ্যই শিক্ষার চলমান অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগ একাডেমিক বিষয়ে তৎপর।

তারপরও আপনাদের এ ধরনের অশোভন আচরণে বিভাগ মর্মাহত। তা ছাড়া, বিভাগীয় একাডেমিক বিষয় নিয়ে আপনারা বিভাগীয় ছাত্র-উপদেষ্টা ও বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে আলোচনা না করে বিভাগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও সরাসরি উপাচার্যের শরণাপন্ন হয়েছেন। আপনাদের এ ধরনের আচরণ বিভাগীয় শৃঙ্খলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধিকে লঙ্ঘন করেছে। আলোচিত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের সাম্প্রতিক অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডের জন্য বিভাগীয় একাডেমিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলো। নোটিশ পাওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য আপনাদের নির্দেশনা দেওয়া হলো।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, মূলত সেশন জটের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যে আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে সেখানে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ছিল, শুধু আমাদের বিভাগই ছিল এমন না। যে কারণে আমরা সবাই মিলে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি সমাধান দিয়েছেন, আমরা তা মেনে নিয়েছি। আমরা ভয়াবহ সেশন জটের কবলে ছিলাম। আমাদের পরীক্ষা চলছে, এর মধ্যে এই নোটিশ আমাদের মানসিক চাপে ফেলেছে। আশঙ্কা করছি, পরীক্ষার ফলাফলে এর প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিভাগের শিক্ষা সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা এবং করোনাকালীন অচলবস্থায় যে সেশন জট তা নিয়ে ছাত্রদের মনে অসন্তোষ থাকতেই পারে। ছাত্ররা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে, তা নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় কিন্তু এটাকে কেন্দ্রে করে কোনো শিক্ষককে নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করলে সে শিক্ষক ছোট হন। বিভাগ ছোট হয়, পাশাপাশি ওই বিভাগের ছাত্ররাও কিন্তু ছোট হয়। তারা বিভাগের সমস্যা নিয়ে প্রথমে ছাত্র উপদেষ্টা, বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলবে, এটাই শোভন এবং উচিত। বিভাগের শিক্ষক যদি সমাধান দিতে না পারে তখন বিভাগের সভাপতি তাদের সাজেস্ট করবে যে পরবর্তী উদ্যোগ কী হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বারবার এই একটি ব্যাচের তত্ত্বাবধানে তারা বিভাগের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা না করেই নানা সময় এই উদ্যোগ নিচ্ছে। যেটা বিভাগকে বিব্রত করছে। বিভাগ জবাব দেবে যে কেন পরীক্ষা নিতে পারছে না, এটাতো আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জবাব দিতে পারবে না। এ বিষয়ে তাদের চিঠি দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের সতর্ক করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধু্রী বলেন, আমি এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।

গত ৩১ আগস্ট স্নাতকের স্থাগিত পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা দেন। সে আন্দোলনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।

Comments

The Daily Star  | English
food crisis

Thailand trip a step forward in efforts to protect economic interests: PM

Prime Minister Sheikh Hasina declared her recent six-day trip to Thailand as a landmark success, aimed at safeguarding Bangladesh's economic interests and elevating its regional presence

35m ago