লালমনিরহাট

এখনও পানিবন্দি তিস্তাপাড়ের অন্তত ৫ হাজার মানুষ

উজানের ভারত থেকে পাহাড়ি ঢল আসা বন্ধ হওয়ায়, কমেছে তিস্তা নদীর পানি। নদীতে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচে থাকলেও, বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলোতে এখনো আছে বানের পানি। লালমনিরহাটের সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী প্রায় ২০টি গ্রামে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট ও ফসলের খেত তলিয়ে রয়েছে বানের পানিতে।
তিস্তা নদীর তীরবর্তী প্রায় ২০টি গ্রামে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। ছবি: স্টার

উজানের ভারত থেকে পাহাড়ি ঢল আসা বন্ধ হওয়ায়, কমেছে তিস্তা নদীর পানি। নদীতে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচে থাকলেও, বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলোতে এখনো আছে বানের পানি। লালমনিরহাটের সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী প্রায় ২০টি গ্রামে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট ও ফসলের খেত তলিয়ে রয়েছে বানের পানিতে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, বৃহস্পতিবার রাতে এ নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে ওঠায় নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়। এসব গ্রামে নদীর পানি ঢুকে পড়ে। উজান থেকে পাহাড়ি ঢল আসা আপাতত বন্ধ আছে এবং এখন গ্রামগুলো থেকে পানি ধীর গতিতে নামছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এখন শুধু তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল গ্রামগুলোতে বানের পানি আটকে আছে। আগামীকাল পর্যন্ত উজান থেকে পাহাড়ি ঢল না আসলে, এই পানি নেমে যাবে।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের প্রায় দুই হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। এসব মানুষকে নৌকা অথবা কলাগাছের তৈরি ভেলায় করে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

অনেকে বাড়িতে রান্নার অবস্থা না থাকায়, অনেককেই শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ঘরের ভেতর পানি ঢুকে যাওয়ায় চুলা উঁচু করে রান্না করতে হচ্ছে। ছবি: স্টার

আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিনের (৬২) ঘরের ভেতর এখনো দুই-তিন ফুট পানি। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুই দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। বাড়িতে বানের পানি ঢুকেছে, আর নামছে না। আত্মীয়-স্বজনরা খাবার পাঠাচ্ছে। সেগুলো খেয়ে বেচে আছি।’

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধান গ্রামের পানিবন্দি আফিয়া বেওয়া (৫০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বানের পানি ঘর থেকে নামছে না, সেজন্য ঠিকমতো চলাফেরা করা যাচ্ছে না। রান্না করতে পারছি না, তাই ঠিকমতো খাবারও জুটছে না।’

বানের পানির কারণে বাড়ির শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হয় বলে জানান তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ গ্রামের পানিবন্দি সকিণা খাতুন (৩৪) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাড়ির নলকূপ ডুবে গেছে বানের পানির নিচে। সেজন্য বাইরে থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। খাটের উপর চুলা বসিয়ে কষ্ট করে রান্না করে খেতে হচ্ছে।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের পানিবন্দি কৃষক আলীমুদ্দিন শেখ (৫৬) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তাদের আমন ধানের চারাগাছ তলিয়ে গেছে বানের পানিতে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বানের পানি নেমে না গেলে, এসব চারাগাছ নষ্ট হতে পারে।

যোগাযোগ করা হলে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পানিবন্দি মানুষের তালিকা তৈরি করে, তাদের ত্রাণ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Four of a family among five killed as private car, truck collide in Habiganj

The family members met the tragic accident while returning home after receiving someone at Dhaka airport

37m ago