দুর্ভোগে তিস্তাপাড়ের বানভাসিরা

তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে এখনও নামেনি পানি। এখনও এসব এলাকার ঘর-বাড়িতে রয়ে গেছে বানের পানি। পানির নিচে ডুবে আছে ফসলি জমি ও রাস্তা-ঘাট।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তাপাড়ের কালমাটি গ্রামে এখনও নামেনি বানের পানি। ছবি: স্টার

তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে এখনও নামেনি পানি। এখনও এসব এলাকার ঘর-বাড়িতে রয়ে গেছে বানের পানি। পানির নিচে ডুবে আছে ফসলি জমি ও রাস্তা-ঘাট।

কোন কোন উপদ্রুত এলাকা থেকে গত শুক্রবার রাতেই নেমে গেছে বানের পানি। শুক্রবার রাত থেকে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢল আসলেই বেড়ে যায় তিস্তার পানি। এতে প্লাবিত হয় তিস্তা নদীর অববাহিকার গ্রামগুলো আর তলিয়ে যায় চরগুলো। আবারও যেকোনো সময় উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে পারে বলে তিনি আশংকা করছেন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের বানভাসি বদিয়ার রহমান (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমার বাড়িতে তিস্তার পানি ঢুকে পরে। বাড়ি থেকে এখনও বানের পানি নামেনি। ঘরের ভেতর এখনও এক হাঁটু পানি। খুব ধীরে ধীরে বানের পানি নামছে।’

আদিতমারী উপজেলার চৌরাহা গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন (৬২) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নদীর পানি কমেছে, কিন্তু আমাদের ঘরে আসা পানি এখনও আছে। গ্রামের রাস্তাগুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় চলাফেরা করতেও অসুবিধা হচ্ছে। খাটের ওপর চুলা বসিয়ে কোনো রকমে রান্নার কাজ করতে হচ্ছে।’

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে এই ইউনিয়নে প্রায় ৮০০ পরিবারে তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেন। এখনও তিন শতাধিক পরিবারের ঘরে বানের পানি রয়েছে।’

বৃষ্টিপাত না থাকায় দ্রুতই উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে বানের পানি নেমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, ‘বন্যা উপদ্রুত এলাকা থেকে বানের পানি নামতে শুরু করেছে, কিন্তু দুর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের। ঘরের ভেতর পানি থাকায় রান্না করতে পারছেন না অনেকে। শুকনো খাবারই তাদের ভরসা।’

গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপদৎসীমার উপরে চলে যাওয়ায় প্লাবিত হয় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী ১৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম ও চরাঞ্চল। এতে প্রায় চার হাজার পরিবারের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেন।

Comments

The Daily Star  | English

Upazila Polls: AL, BNP struggle to keep a grip on grassroots

The upazila election has exposed how neither of the two major parties, the Awami League and BNP, has full control over the grassroots leaders.

8h ago