জাপানে দুর্গাপূজা উদযাপন

করোনা মহামারির কারণে এ বছর উৎসব ছাড়াই শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করেছেন জাপানে বসবাসরত হিন্দুধর্মাবলম্বীরা।
টোকিওর কিতা সিটি কিতা কুরিতসু উকিমা কুমিন সেন্টারে সার্বজনীন পূজা কমিটির (জাপাপ) এবারের আয়োজনটি ছিল ২৬তম। ১০ অক্টোবর রোববার (সাপ্তাহিক ছুটির দিন) সকাল ১১টায় দুর্গাপূজা শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় প্রতিমা প্রতীকী বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়।
সকাল ১১টা থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও দুপুর আড়াইটায় অঞ্জলি দেওয়া হয়। তবে, এ বছর বিধিনিষেধের কারণে প্রসাদ বিতরণ করা হয়নি। পূজা শেষে অতিথিদের মাঝে ফল বিতরণ করা হয়। পূজায় পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করে শ্রী অমিতাভ ভট্টাচার্য।
জাপানে করোনার কারণে ঘরোয়া আয়োজনে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ধর্মীয় আয়োজনও তার বাইরে নয়। এ কারণে আলোকসজ্জা, সাজসজ্জাসহ উৎসব সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় বাদ রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারের পূজাকে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশে দুর্গাপূজা ৫ দিন ধরে উদযাপিত হলেও জাপানে একদিনে সব আচার পালন করার মাধ্যমে রোববার এই পূজা উদযাপিত হয়।
পূজায় উপস্থিত ছিলেন সম্প্রতি জাপানে নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আরিফ মোহাম্মদ। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, 'শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ জাপানে বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে, উদযাপন কমিটি, পৃষ্ঠপোষক এবং আগত অতিথিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। সমাজে অন্যায়, অবিচার, অশুভ ও অসুরশক্তি দমনের মাধ্যমে শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ পূজা হয়ে থাকে। আবহমানকাল ধরে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দুর্গাপূজা পালন করে আসছে। এ উৎসব সর্বজনীন।'
তিনি আরও বলেন, 'বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।'
আরিফ মোহাম্মদ বলেন, 'দুর্গোৎসব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মাঝে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধনকে আরও সুসংহত করুক-এ কামনা করি।'
এছাড়া, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের প্রবাসী নেতারা উপস্থিত থেকে পূজারীদের উৎসাহ দেন।
প্রতিবছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হলে ঢাকের শব্দে ধুনচি ধুনট হাতে নৃত্যের তালে তালে চলে নাচ শেষে আরতি, সিঁদুর খেলা, মিষ্টিমুখ ও আলিঙ্গন এবং সবশেষে প্রতিমা প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ পূজার সব আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি হলেও এবছর মহামারি এবং সমাজের সব অনাচার দূর করে সর্বত্র শান্তির বার্তা নিয়ে আসার কামনায় প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সমাপ্তি হয়।
Comments