নায়ক ফারুকের মুখে নায়করাজ রাজ্জাকের অজানা কথা

নায়ক ফারুকের জন্মদিন আজ বুধবার। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জন্মেছিলে তিনি। ৭৩ বছরে পা রাখলেন বরেণ্য এই অভিনেতা।
নায়করাজ রাজ্জাক ও নায়ক ফারুক। ছবি: স্টার

নায়ক ফারুকের জন্মদিন আজ বুধবার। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জন্মেছিলে তিনি। ৭৩ বছরে পা রাখলেন বরেণ্য এই অভিনেতা।

ঢাকাই সিনেমার 'মিয়াভাই' খ্যাত নায়কের জন্মদিনে জানাব অপ্রকাশিত এক ঘটনার কথা। ২০১৮ সালে এ ঘটনার বিষয়টি তিনি নিজেই ভাগাভাগি করেছিলেন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে।

ফারুক জানান, ঢাকা ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে নায়করাজ রাজ্জাক মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করেছিলেন আজাচৌ, মানে বিখ্যাত বিনোদন সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ জামান চৌধুরীর। যদিও নায়করাজ রাজ্জাক উপাধি তিনিই দিয়েছিলেন নায়ককে। পুলিশ কেস পর্যন্ত হয়েছিল এ ঘটনায়। তখনকার চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব খান আতাউর রহমান থেকে শুরু করে নারায়ণ ঘোষ মিতা, কাজী জহিরসহ অনেকেই কিছুই করতে পারছিলেন না এ বিষয়ে।

একসময় সবাই সরে গিয়েছিলেন রাজ্জাক ভাইয়ের পাশ থেকে। ঘটনাটা খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছিল। একটা মহল চক্রান্ত করছিল রাজ্জাক ভাইকে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। তার ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল তারা। সেই সময় চাইলে আমিও প্রতিশোধ নিতে পারতাম। কারণ আমার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী ছিলেন তিনি, কিন্তু আমি সেটা করিনি।

রাজ্জাক ভাই একদিন আমাকে বললেন, 'আমার মানসম্মান বাঁচাও ফারুক।'

তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ঘটনা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমার এক সহকর্মী জনপ্রিয় নায়ককে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে, তার মানসম্মান নষ্ট করবে, এটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছিলাম খুব। তখন আমি আজাচৌ'র সঙ্গে বেশি বেশি যোগাযোগ বাড়িয়ে দিলাম। নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখতাম তার। ঘটনার তিন দিনের দিন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল রাতে, এরমধ্যেই রাত ১২টার পর রাজ্জাক ভাইকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে আসলাম। সেখানেই আজাচৌ চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। দুজন-দুজনকে দেখে চমকে গেলেন। তাদের মেলানোর জন্য অনেক নাটক করেতে হয়েছিল। এই ঘটনার কথা অনেকেই জানেন না, এটা আমি করেছিলাম। কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে দেইনি রাজ্জাক ভাইয়ের।

মোট তিনটা সিনেমা 'এরাও মানুষ', 'মায়ের আঁচল' ও 'সখী তুমি কার' সিনেমায় অভিনয় করেছি রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে। আমার কিছুটা বড় হলেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল তার সঙ্গে।

এইচ আকবর পরিচালিত 'জলছবি' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নায়ক ফারুকের বড়পর্দায় অভিষেক হয়। ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়।

ফারুক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে 'সারেং বৌ', 'লাঠিয়াল', 'সুজন সখী', 'নয়নমণি', 'মিয়া ভাই', 'গোলাপী এখন ট্রেনে', 'সাহেব', 'আবার তোরা মানুষ হ', 'আলোর মিছিল', 'দিন যায় কথা থাকে', 'সখী তুমি কার', 'কথা দিলাম' ও 'সূর্য গ্রহণ' ইত্যাদি। 

কিংবদন্তি অভিনেতা ফারুক বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আছেন। গত ২১ মার্চ থেকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

UN to support Bangladesh reforms

UN Resident Coordinator Gwyn Lewis tells Chief Adviser Prof Muhammad Yunus

49m ago