ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল হাইপারসনিক: উত্তর কোরিয়া

ছবি: কেসিএনএ/রয়টার্স

ক্ষমতা গ্রহণের ১০ বছর উপলক্ষে গত ১ জানুয়ারির বক্তৃতায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন পারমাণবিক অস্ত্রের চেয়ে দেশটির অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বললেও মাত্র ৪ দিন পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের দেশটি।

গতকাল যে ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা চালানো হয়েছিল প্রাথমিকভাবে সে সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার সেই ধোঁয়াশা দূর করেছে কিম সরকার।

আল-জাজিরা জানায়, উত্তর কোরিয়ার দাবি গতকাল সফলভাবে পরীক্ষিত ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রস্তুতি গত অক্টোবরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম চিহ্নিত করে। যদিও জাতিসংঘ উত্তর কোরিয়ার এমন উদ্যোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের ৫ গুণ বেশি দ্রুত (ঘণ্টা প্রতি ৬ হাজার ২০০ কিলোমিটার) বেগে ও অনেক নিচ দিয়ে উড়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে।

সিএনএন জানিয়েছে, তত্ত্বগতভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের তুলনায় ২০ গুণ বেশি দ্রুত বেগে ছুটে যেতে পারে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়া প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা দেয়। চলতি সপ্তাহে তারা আবার এমন ঘোষণা দিলো।

উত্তর কোরিয়ার দাবি সত্য হলে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।

সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সির লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির ভিজিটিং জ্যেষ্ঠ গবেষক ড্রিউ টমসন বলেন, 'যদি তা ঘটে থাকে তাহলে বিশাল ব্যাপার। একটা কিছু পেয়েছি আর পেতে চাই—এ দুয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে।'

গতকালকের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সেজং ইনস্টিটিউটের সেন্টার ফর নর্থ কোরিয়ান স্ট্যাডিসের পরিচালক চেয়ং সেয়ং-চ্যাং গণমাধ্যমকে বলেন, 'হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কাজ পুরোপুরি শেষ করতে উত্তর কোরিয়ার আরও অন্তত ২ থেকে ৩টি পরীক্ষার প্রয়োজন হবে।'

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, 'হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের দুনিয়ায় এমন সফল পরীক্ষার কৌশলগত গুরুত্ব আছে।'

'ক্ষেপণাস্ত্রটি ৭০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে' উল্লেখ করে কেসিএনএ জানায়, এই সফল পরীক্ষা দেশটির সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন ত্বরান্বিত করবে।

এর আগে উত্তর কোরিয়া সাবমেরিন ও ট্রেন থেকে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা জানিয়েছিল।

২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়া দূরপাল্লার আন্ত-মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার কথা জানায় এবং ২০২০ সালে জাতীয় কুজকাওয়াজে আরও ক্ষমতাসম্পন্ন আইসিবিএম প্রদর্শন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেজি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস'র জ্যেষ্ঠ ফেলো আনকিত পান্ডা রয়টার্সকে বলেন, 'আমি মনে করি, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় হাইপারসনিকের গুরুত্ব উত্তর কোরিয়াবাসী বুঝতে পেরেছে।'

এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র রাশিয়া ও চীন তাদের কাছে ব্যবহারযোগ্য হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকার দাবি করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

3h ago