আফগানিস্তানে হাজারা ও বিরোধীদের 'জোরপূর্বক উচ্ছেদ' করছে তালেবান
আফগানিস্তানের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর ও জমি ছেড়ে যেতে বাধ্য করছে তালেবান। যাদেরকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তারা শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ভুক্ত বা সাবেক আফগান সরকারের কর্মী-সমর্থক।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বরাত দিয়ে আজ শনিবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এভাবে উচ্ছেদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে হাজারা ও বিরোধীদের সমষ্টিগত শাস্তি দিচ্ছে তালেবান। দখল করা জমি ও ঘরবাড়ি তালেবান সমর্থকদের বিলিয়ে দিচ্ছে তারা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, দক্ষিণের কান্দাহার, হেলমান্দ ও উরুজগান, কেন্দ্রে দাইকুন্ডি এবং উত্তরের বলখ প্রদেশসহ ৫টি প্রদেশ জুড়ে এ উচ্ছেদ চলছে। অনেক মানুষকে মাত্র কয়েক দিনের নোটিশে এবং আইনি মালিকানা প্রমাণের কোনো সুযোগ দেওয়া ছাড়াই বাড়ি ও ফসলের খামার ত্যাগ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বলা হয়েছে, চলে যাওয়ার আদেশ মেনে না নিলে তাদের 'পরিণতি সম্পর্কে অভিযোগ করার অধিকার নেই।'
এ উচ্ছেদ এমন সময় করা হচ্ছে, যখন আফগানিস্তানে শীত আসন্ন এবং গ্রামাঞ্চলের পারিবারগুলো ঘরে ফসল তোলায় ব্যস্ত। এ ফসলের ওপরই তাদের সারা বছরের খাওয়া-পরা নির্ভর করে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এশিয়ার সহযোগী পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেছেন, 'সমর্থকদের পুরস্কৃত করার জন্য জাতিগত বা রাজনৈতিক মতামতের ভিত্তিতে হাজারা ও অন্যদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করছে তালেবান। জোরপূর্বক হুমকি দিয়ে এবং কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া এসব উচ্ছেদ গুরুতর অপব্যবহার, যা সমষ্টিগত শাস্তির সমান।'
তিনি আরও বলেন, 'বিশেষ করে শস্য কাটার সময় এবং শীত শুরু হওয়ার ঠিক আগে পরিবারগুলোকে বাস্তুচ্যুত করা নিষ্ঠুর কাজ হয়েছে। তালেবানের উচিত হাজারা ও অন্যান্যদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা বন্ধ করা এবং আইন ও ন্যায্য প্রক্রিয়া অনুযায়ী জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিচার করা।'
গত আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর তালেবান একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পশতুন নৃগোষ্ঠীর সুন্নি আলেম প্রভাবিত একটি পুরুষ মন্ত্রিসভা বেছে নিয়েছে তারা। প্রতিশোধমূলক হত্যা, সাংবাদিকদের উপর হামলা, নারী অধিকার হরণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তালেবানের বিরুদ্ধে।
Comments