কুষ্টিয়ায় দরপত্র দাখিল করায় প্রকাশ্যে ঠিকাদারের ওপর হামলা
কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে এক ঠিকাদারকে হাতুড়িপেটা করেছেন দুর্বৃত্তরা। হামলার শিকার ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন, নিষেধ না শুনে দরপত্র দাখিল করায় তার ওপর এই হামলা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে শহরের এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) কার্যালয়ের সামনে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার ঠিকাদারের নাম শহিদুর রহমান। তিনি কুমারখালী উপজেলার শানপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং এলজিইডির একজন তালিকাভুক্ত ঠিকাদার।
হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা অনেকে এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে সেই ভিডিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, শহিদুর শহরের এলজিইডি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ জন তাকে ঘিরে ধরে। তাদের বেশিরভাগের হাতে হাতুড়ি ছিল। তারা হাতুড়ি দিয়ে তাকে পেটাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় দুজন তার পিছু নেয়। তাদের একজনের পরনে লুঙ্গি ছিল। আরেকজন প্যান্ট ও শার্ট পরা ছিলেন। তার মুখে মাস্ক ছিল।
শহিদুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই মাস আগে মিরপুর উপজেলায় একটি সড়কের সাত কোটি টাকার দরপত্রে অংশগ্রহণ করি। ওই দরপত্রে অংশ নেওয়ার আগে থেকে এ কাজে শিডিউল ক্রয় না করতে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা আমাকে নিষেধ করেন। পরে আমি কাজটি না পেলেও দরপত্রে অংশ নেওয়ায় ফোনে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিলেন ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতা।'
শহিদুর রহমান অভিযোগ করেন, যারা আজকের হামলায় অংশ নিয়েছে তারা স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার ক্যাডার। তাদের বেশিরভাগের মুখে মাস্ক পরা ছিল। যুবলীগ নেতাসহ হামলাকারীরা মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিনের লোক। কামারুলই তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল।
তিনি বলেন, 'আমি এখনো থানায় অভিযোগ করিনি। করব কিনা ভাবছি। কারণ এখানে আমার জীবনের নিরাপত্তার ব্যাপার আছে।'
জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই হামলার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার এসব করার প্রয়োজনও নেই। দরপত্রে ছয় থেকে সাত জন অংশ নিয়েছেন। কারো কিছু হলো না আর ওনার সমস্যা হলো?'
তিনি দাবি করেন, 'সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার নাম জড়ানো হচ্ছে।'
এ প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কোনো অভিযোগ পাইনি।'
Comments