ডেন্টাল কলেজে ভর্তির আশ্বাসে প্রতারণা, জবি ছাত্র গ্রেপ্তার

সরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ।
মো. আবু মুসা আসারী। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম—মো. আবু মুসা আসারী (২১)। তিনি জাবির ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।

তার হেফাজত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের ভুয়া ২টি পরিচয়পত্র, একাধিক ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রের কপি জব্দ করা হয়। রোববার রাতে গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আবু মুসার প্রতারণার বিবরণ দিয়েছেন গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভিকটিমের মেয়ে গত ১০ অক্টোবর ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দুই দিন পর ফেসবুকে তার সঙ্গে মুসার পরিচয় হয়। মুসা নিজেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রোল নম্বর চেয়ে নিয়ে জানায় যে মেয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ভালো হয়েছে। সে প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়েছে কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনিয়মে করে তার জায়গায় অন্য একজনকে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছেন। মেয়েকে ভর্তি করাতে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানালে, এখন দুই লাখ টাকা ও ভর্তি সম্পন্ন হওয়ার পর বাকি টাকা দাবি করেন মুসা।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্তের কথা বিশ্বাস না করায় ভিকটিমের ইমো আইডিতে ইউজিসির একজন কর্মকর্তার পরিচয়পত্র পাঠান। সন্দেহ দূর করতে মোবাইলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে চ্যাটিংয়ের ভুয়া স্ক্রিনশট পাঠান মুসা। এতে আশ্বস্ত হয়ে ভিকটিম যাত্রাবাড়ী থানার শহীদ ফারুক সড়কের একটি কোচিং সেন্টারের সামনে মুসাকে দুই লাখ টাকা দেন।

তিনি আরও বলেন, টাকা দেওয়ার পর দিন মুসাকে ফোন দিয়ে রেজাল্টের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায়, আজকের মধ্যেই উপরের মহলে আরও এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। নইলে ফলাফল বদল করা যাবে না। মুসার কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অনুমান করেন। অপরদিকে মুসা ভিকটিমের কাছে টাকার জন্য বারবার ফোন দিতে থাকে এবং মেসেঞ্জারে এই বলে হুমকি দেয় যে টাকা না দিলে ভিকটিমের মেয়েকে কোথাও ভর্তি হতে দেবেন না।

এ ঘটনায় গত শনিবার যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন ভিকটিম। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগে হস্তান্তর হলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম, গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাত সাড়ে আটটায় গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকা থেকে মুসাকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, মুসা এভাবে আরও অনেকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তার মুসার ভাই জিএস মোস্তফা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে তার ভাই নিখোঁজ থাকায় রোববার গেন্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। আজ সোমবার ডিবি পুলিশ ফোন দিয়ে জানায় যে তার ভাইকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

The story of Gaza genocide survivor in Bangladesh

In this exclusive interview with The Daily Star, Kamel provides a painful firsthand account of 170 days of carnage.

1d ago