ব্লগার অনন্ত হত্যা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ

মুক্তমনা বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
অনন্ত বিজয় দাশ। ছবি: একুশ তপাদার

মুক্তমনা বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

আজ বুধবার সিলেট সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লব আসামিদের উপস্থিতিতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন।

সাক্ষ্যদাতারা হলেন- মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি পরিদর্শক আরমান আলী, পুলিশ পরিদর্শক (আইটি ফরেনসিক) মাসুদ সিদ্দিকী এবং সিআইডি উপপরিদর্শক মো. সুহেল রানা।

এই তিন সাক্ষীসহ মোট ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।

২০১৫ সালের ১২ মে সকালে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য বোন পঞ্চত্রপা দাশকে নিয়ে বের হন অনন্ত বিজয় দাশ। সিলেট নগরীর সুবিদবাজার নুরানি আবাসিক এলাকার বাসা থেকে গলি ধরে প্রধান সড়কের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন।

এলাকার দস্তিদার বাড়ি দিঘীর পাড়ে বোনের সামনেই কুপিয়ে অনন্তকে হত্যা করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।

সে রাতেই সিলেটের বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন অনন্ত বিজয় দাশের ভাই রত্নেশ্বর দাশ। মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে থানা পুলিশের কাছে থাকলেও পরে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পরিদর্শক আরমান আলী ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করলে আদালত পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর পুনরায় তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র দিলে আদালত তা গ্রহণ করেন।

এ অভিযোগপত্রে অনন্ত বিজয় দাশ হত্যায় অভিযুক্ত করা হয় শফিউর রহমান ফারাবী, মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী, আবুল খায়ের রশীদ আহমেদ, আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন, হারুনুর রশীদ এবং ফয়সল আহমেদকে।

তাদের মধ্যে ফারাবী এবং আবুল খায়ের জেলে। অভিযুক্ত মান্নান, যিনি এই মামলায় দণ্ডবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তিনি ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। মামলার বাকি ৩ আসামি এখনো পলাতক।

মামলার বিচার প্রাথমিক অবস্থায় কয়েক বছর সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে পরিচালিত হয়। পরে সিলেটে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর ২০২০ সালের শুরুর দিকে মামলাটি এই ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

Comments