অবশেষে সেতু তৈরি হলেও নেই সংযোগ সড়ক

একে একে ১০ বার তারিখ পেছানোর পর লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নে রত্নাই নদীর ওপর মেঘারাম-দুড়াকুটি রুটে সেতু তৈরি হলেও এখনো হয়নি সংযোগ সড়ক। এখনো বাকি সেতুর শেষ মুহূর্তের কাজ।
সংযোগ সড়ক না হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ১০ গ্রামের ২০ হাজারের বেশি মানুষ। এখনো তাদেরকে নৌকায় পাড়ি দিতে হচ্ছে রত্নাই নদী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস সূত্র জানা গেছে, এলজিইডি'র অধীন ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচে রত্নাই নদীর ওপর ১২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮ মিটার প্রস্তের সেতুটির কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে।

২০১৮ সালের মে মাসে সেতুটির নির্মাণ সম্পন্ন করার চুক্তি হয় ঠিকাদার গোলাম রব্বানীর সঙ্গে। নানা অজুহাতে ঠিকাদার সেতুটির নির্মাণকাজ ১০ বার পিছিয়ে নেন। গত নভেম্বরে সেতুটির মূল অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়। সেতুটির শেষ মুহূর্তের কাজসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণ এখনো বাকি। ঠিকাদার এ পর্যন্ত ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন।
মেঘারাম গ্রামের রথীন্দ্রনাথ বর্মণ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রত্নাই সেতু নির্মাণে চরম গাফিলতির পরিচয় দিয়েছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার। নানা টালবাহানার পর সেতুটির মূল অবকাঠামো তৈরি হলেও সংযোগ সড়ক নেই। এখনো নৌকায় নদী পাড়ি দিতে হচ্ছে।'
'প্রত্যেকবার নৌকায় পাড়ি দিতে ৫ টাকা লাগে আর বাইসাইকেলের জন্য দিতে হয় ১০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের জন্য ২০ টাকা। সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের দুর্ভোগ আগের মতোই রয়ে গেছে,' যোগ করেন তিনি।
মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক তাগাদা দিয়ে সেতুর কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন সেতুর সংযোগ সড়ক নিয়ে চলছে টালবাহানা। এ ব্যাপারে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সঠিক না থাকায় স্থানীয়রা ঠিকমতো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছেন না।'
ঠিকাদার গোলাম রব্বানীর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'করোনা মহামারি আর অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে যথাসময়ে সেতুর কাজ শেষ করতে পারিনি। খুব শিগগির সেতুর সংযোগ সড়ক ও ফিনিশিং ওয়ার্ক শেষ করা হবে।'
লালমনিরহাট এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণ রত্নাই সেতুর কাজ পিছিয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রকল্পটিও শেষ হয়েছে। ঠিকাদারের ৬০ লাখ টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে ঠিকাদারকে সেতুর ফিনিশিং ওয়ার্ক ও সংযোগ সড়ক শেষ করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ঠিকাদার ব্যর্থ হলে বিলের অবশিষ্ট ৬০ লাখ টাকা দিয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করবে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।'
Comments