ঘর নেই বীরাঙ্গনা শেফালী দাসের
তিনি একজন বীরাঙ্গনা। নিজস্ব কোনো জমি নেই। বসবাসের জন্য নিজের নেই কোনো ঘর। সরকারি ঘরের জন্য আবেদন করেও আসেনি বরাদ্দ।
বিশ বছর আগে স্বামী হারানো বীরাঙ্গনা শেফালী দাস ছোট ছেলেকে নিয়ে বাস করেন রেলওয়ের পরিত্যক্ত একটি কোয়ার্টারে।
লালমনিরহাট শহরের সাহেবপাড়া এলাকায় শেফালী দাসের সংসার চলছে সরকারের দেওয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতায়। বড় ছেলে থাকেন ঢাকায়। বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
শেফালী দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার নিজের ঘর নেই। রেলওয়ের পরিত্যক্ত যে কোয়ার্টারটিতে বসবাস করছি সেটি বসবাসের উপযোগী নয়। একটু বৃষ্টি আসলেই পানি গড়িয়ে পড়ে। ছোটো ছেলে এখনো বেকার। গেল চারবছর ধরে সরকারের ভাতার টাকায় বেঁচে আছি।'
স্থানীয়রা জানান, শেফালী দাসের স্বামী ধীরেন চন্দ্র দাস রেলওয়ের কর্মচারী ছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে তার মৃত্যু হয়। স্বামীকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে চরম দারিদ্র্যতার কষাঘাত বাঁচতে হয়েছে শেফালী দাসকে। ৪ বছর আগে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পেলেও ভালোভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন পাননি তিনি।
শেফালী দাস বলেন, 'জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করার সামর্থ্য নেই। বাধ্য হয়েই রেলওয়ের জীর্ণশীর্ণ একটি কোয়ার্টারে বসবাস করছি। নিজের ঘরে বসবাস করার স্বপ্ন অনেক দিনের। কিন্তু সামর্থ্য নেই। আমি সরকারি ঘরের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু নিজস্ব জমি না থাকায় আমার নামে সরকারি ঘর বরাদ্দ হয়নি।'
শেফালী দাসের ছেলে কমল দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মায়ের নামে একটি সরকারি ঘরের জন্য অনেক ছুটাছুটি করছি কিন্তু তা পাচ্ছি না।' সরকারি ঘরের জন্য আবারো আবেদন করেছি।'
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা মাসুম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বীরাঙ্গনা শেফালী দাসের জন্য সরকারি ঘরের আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে তার বাড়ির কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি শিগগির বীরাঙ্গনা শেফালী দাসের জন্য ঘরের অনুমোদন পাবো।'
Comments