এক তোড়া ফুল দিয়ে প্রিয়জনকে বলুন, শুভ ইংরেজি নববর্ষ

সকালে হালকা শিশির ছুঁয়ে যাচ্ছে ঘাসের কণা। গাছ থেকে ঝরে পড়ছে পাতা। পরিবেশের শুষ্কতার মাঝেই এসেছে আনন্দের বার্তা। ঘরের দেয়ালে ঝুলে থাকা ক্যালেন্ডার হয়ে পড়েছে অকেজো। দুয়ারে এসেছে ইংরেজি নতুন বছর, ২০২২।
রাজধানী শাহবাগের দোকানগুলোতে বেড়েছে ফুলের বিক্রি। ছবি: আনিসুর রহমান

সকালে হালকা শিশির ছুঁয়ে যাচ্ছে ঘাসের কণা। গাছ থেকে ঝরে পড়ছে পাতা। পরিবেশের শুষ্কতার মাঝেই এসেছে আনন্দের বার্তা। ঘরের দেয়ালে ঝুলে থাকা ক্যালেন্ডার হয়ে পড়েছে অকেজো। দুয়ারে এসেছে ইংরেজি নতুন বছর, ২০২২।

নতুন বছর মানেই নতুন বার্তা। ইতোমধ্যেই অনেকের ঘরে থাকা খাতা কিংবা কম্পিউটারের ওয়ার্ড ফাইলে লেখা হয়েছে আগমনী বছরের কর্ম পরিকল্পনা।

এত সব হিসেব নিকেশের মাঝে চারপাশে তাকালে কিছুটা হলেও মন ভালো হতে পারে। শুষ্ক মৌসুমের মাঝে ঘরের কোণের বারান্দায় ফুটেছে নতুন ফুল। শাহবাগ কিংবা বেইলি রোডের ফুলের দোকানো পরিপূর্ণ। গোলাপ, গাঁদা, কসমস, জিনিয়া, সূর্যমুখী- এসব ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে বাগান, বারান্দা, ফুলের দোকান।

এই তো সেদিনের কথা, হেঁটে হেঁটে রমনা পার্কের পেরুতে নজরে এলো মৌসুমি নানা ফুল। সবার আগে ফুটেছে সুগন্ধি গোলাপ। এর পর চন্দ্রমল্লিকা। আর কাঁচা হলুদ রঙের গাদা ফুল যেন বসন্তকে স্বাগত জানাতে ফুটেছে।

ফুল ফুটেছে বলে ছুটে আসছে প্রজাপতিও। রঙিন ডানা মেলে এ ফুলে ও ফুলে ওড়ে বেড়াচ্ছে।

যাদের ফুলের বাগান নেই, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে তাদের অনেকেই এখন ছুটছেন ফুলের দোকান। গেলো কয়েকদিন ধরেই ফুলের দোকানগুলোতে বেশ ভিড় জমেছে। নতুন বছরে প্রিয়জনকে অভিবাদন জানাতে তারা ফুল কিনছেন। অনেকেই আবার জানুয়ারির এক তারিখের জন্য অর্ডার দিয়েছেন ফুলের তোড়া।

শীতের অন্যতম প্রধান ফুল গোলাপ। সারাবছর ফুটলেও শীতে ফোটা গোলাপের রং, ঘ্রাণ ভিন্ন। আর গোলাপের কথা যখন উঠলো, তখন আবশ্যিকভাবেই আলোচনায় চলে আসে সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রাম। শুধুমাত্র গোলাপ চাষ দিয়েই একটি গ্রামের চিত্র বদলে গিয়েছে। নতুন বছরকে সামনে রেখে এখানে ছিল গোলাপের প্রচুর অর্ডার।

শাহবাগের ফুলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, ফুল পচনশীল হওয়ায় অগ্রিম বিক্রি হয় না। তবে পহেলা জানুয়ারিতে সামনে রেখে প্রচুর ফুলের অর্ডার পাচ্ছেন তারা।

নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে নগরবাসী ফুলের দোকানের দিকে ছুটছেন বলে শাহবাগের ফুলের দোকানেরও ব্যবসা জমে উঠেছে। সে সঙ্গে শীতকাল বিয়ের মৌসুম হওয়ার কারণেও সেখানকার ফুলের ব্যবসা জমে উঠেছে।

গেলো বুধবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণে হাসি ফুটেছে ফুল ব্যবসায়ীদের মুখে।

তাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকেই গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা গ্লাডিওলাস, ক্যালনডুলা, অর্কিড, কিসিমসিমা মিম ফুলের বিক্রি শুরু হয়। এখানে খুচরার পাশাপাশি পাইকারি ফুল বেশি বিক্রি হয়।

পাশাপাশি থাকা ৩ দোকান শেফালী ফুল ঘর, অনিকা পুষ্প বিতান, ইকো ফ্লাওয়ার শপ- যার প্রত্যেকটিতেই দেখা মিলেছে বেশ ভিড়। তবে আজ পহেলা জানুয়ারি ভিড় মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আসা বিক্রেতাদের।

শাপলা পুষ্প কেন্দ্র, ফুল বাহার পুষ্প কেন্দ্র, নিউ ফুলতলা ফ্লোয়ার হাউস, ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপ, অহনা ফুল কুটির, ফাতেমা পুষ্পালয়, ফুলশয্যা, নীলকণ্ঠের সামনেও দেখা মিলেছে ভিড়ের।

শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির তথ্য মতে, শাহবাগ মোড় থেকে শিশু পার্কের গেট ও শাহবাগ থানা গেট পর্যন্ত সব মিলিয়ে ফুলের দোকান রয়েছে ৫১টি।

শীতের এ উৎসবমুখর পরিবেশে ফুলের ব্যবসা সম্পর্কে শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে ব্যবসা ভালো। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ফুলের ব্যবসা ভালো হয়। সপ্তাহের বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ ৩ দিন গায়ে হলুদ ও বিয়ে থাকে। এ সময় বেচাকেনা ভালো হয়। সে সঙ্গে পহেলা জানুয়ারির দিন বিক্রি ভালো হয়। কারণ, এইদিন অনেকেই তার প্রিয়জনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

তার কথা মতে, আপনিও চাইলেও আজকে বছরের প্রথম দিনে প্রিয়জনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। হাতে এক তোড়া ফুল দিয়ে বলুন, শুভ ইংরেজি নববর্ষ!

Comments

The Daily Star  | English

Saber Hossain Chowdhury arrested

The Detective Branch of police today arrested Saber Hossain Chowdhury, former environment forest and climate change minister and Dhaka-9 lawmaker, at the capital’s Gulshan

1h ago