কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাটে আমনের চারা সংকট, দুশ্চিন্তায় কৃষক

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত খেতে আবার আমনের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। কিন্তু, কোথাও চারা সংকট এবং কোথাও চারার দাম বেশি হওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধাইরখাতা গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত আমন খেত। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত খেতে আবার আমনের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। কিন্তু, কোথাও চারা সংকট এবং কোথাও চারার দাম বেশি হওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

দুই জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদীর চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমির আমন খেত বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল।

এর মধ্যে কুড়িগ্রামে রয়েছে ২৬ হাজার হেক্টর জমি এবং লালমনিরহাটে রয়েছে সাত হাজার হেক্টর জমি।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক জহির আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চার বিঘা জমির আমন খেত ১৫ দিন পর্যন্ত পানিতে নিমজ্জিত ছিল। প্রায় ৮০ শতাংশ আমনের চারা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

'নতুন করে আমনের চারা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। কিন্তু, এখনো কোথাও তা পাইনি,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'যদি আমনের চারা পাই তাহলে আবার ধান লাগাতে পারবো। চারা না পেলে এ বছর জমি পতিত রাখতে হবে।'

সদর উপজেলার চর পার্বতী গ্রামের বন্যাদুর্গত উজির আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক জায়গায় দুই বিঘা জমির আমন খেত ১৪ দিন বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আরেক জায়গায় তিন বিঘার আমন খেত আট দিন পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সেখানে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চারার ক্ষতি হয়েছে।'

'এখন আমরা আমনের চারা সংকটে আছি,' যোগ করেন তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধাইরখাতা গ্রামের কৃষক আফছার আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিন বিঘা জমির আমন খেতের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। চারা সংকট থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে আবার আমন চারা রোপণ করতে পারবো কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।'

তিনি আরও বলেন, 'কয়েকজন কৃষকের কাছে বাড়তি আমন চারা আছে। কিন্তু, তারা দাম বেশি চাচ্ছেন।'

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশা করছি, আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে কৃষি বিভাগ আমনের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারবে। যেসব এলাকায় আমনের খেত ১৬ দিন পর্যন্ত বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল সেসব এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।'

'যেসব এলাকায় আট থেকে ১০ দিন পর্যন্ত আমনের খেত পানিতে নিমজ্জিত ছিল সেসব এলাকায় আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করি,' যোগ করেন তিনি।

'জেলায় এখনো ৬০০ থেকে ৭০০ হেক্টর জমির আমন বীজতলা আছে,' উল্লেখ করে মঞ্জুরুল হক বলেন, 'আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে মন্ত্রণালয়কে জানাবো। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কী সহায়তা দেবে তা এখনো জানানো হয়নি। আশা করছি, বন্যাদুর্গত কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত আমনের খেতে আবার চারা লাগাতে পারবেন।'

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লালমনিরহাটে বন্যার পানি চার দিনের বেশি স্থায়ী না হওয়ায় ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে কিছু কিছু নিচু এলাকায় আমনের ক্ষেত ১২ থেকে ১৩ দিন নিমজ্জিত থাকায় সেগুলোর সামান্য ক্ষতি হয়েছে।'

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িগ্রামে কোনো কোনো এলাকায় গত ১৯ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্যার পানি ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Nor’wester brings relief, triggers waterlogging in Ctg

The nor'wester or kalboishakhi, a storm that is natural to this season, struck the port city and adjoining areas immediate after 3:00pm and the downpour followed soon afterwards

48m ago