রূপগঞ্জে কারখানায় আগুনে নিহত ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৪৮ জনের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষায় ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ছবি: আনিসুর রহমান

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৪৮ জনের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষায় ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর বিশেষ পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, 'হাসেম ফুড কারখানা থেকে পুড়ে যাওয়া ৪৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষা করে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এখনও তিনজনের পরিচয় শনাক্তের কাজ বাকি আছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে তাদের পরিচয়ও শনাক্ত হয়ে যাবে।'

তিনি বলেন, 'মরদেহগুলো পর্যায় ক্রমে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আগামীকাল দুপুর ২টা থেকে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। প্রথম দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের ২৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর হবে। পরের দুই দিনে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে থাকা মরদেহ হস্তান্তর হবে।'

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিআইডি থেকে আমরা ৪৫ জনের একটি তালিকা পেয়েছি। এ তালিকা অনুযায়ী নিহত ২৪ জনের মরদেহ আগামীকাল দুপুরে একজন এডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এসময় মরদেহ দাফন ও সৎকারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা নগদ দেওয়া হবে।'

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের উপমহাপরিদর্শক সৌমেন বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে ইতোমধ্যে আহত ২২ জনকে ৫০ হাজার করে ১১ লাখ টাকা ও কারখানা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহত তিন জনকে ছয় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। যে ৪৫ জনের মরদেহ শনাক্ত হয়েছে তাদের পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকার চেক পৌঁছে দেবো। তবে আগামীকাল থেকেই চেক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চেকের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে জানানোর প্রস্তুতি চলছে।'

উল্লেখ, গত ৮ জুলাই বিকেলে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার ১৪ নম্বর গুদামের ছয় তলা ভবনে আগুন লাগে। প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরদিন বিকেলে আগুন নিভিয়ে ফেলার পর ৪৮ জনের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে তিন জন নিহত ও ১০ জন আহত হন।

এ ঘটনায় কারখানার মালিক আবুল হাসেমসহ আট জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করে পুলিশ। আসামিদের মধ্যে কারখানার মালিক মো. আবুল হাসেমসহ তার চার ছেলে ও ডিজিএম, এজিএম ও প্রকৌশলীসহ আট জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে আবুল হাসেম ও তার চার ছেলে জামিনে বের হয়ে আসেন। কারখানার ডিজিএম, এজিএম ও প্রকৌশলী এখন কারাগারে আছেন। পরে সিআইডিকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তাৎক্ষনিক এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জেলা প্রশাসনের পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন সাত কার্যদিবসে, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন সাত কার্যদিবসে এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও কোন কমিটি এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Love road at Mirpur: A youthful street

Certain neighbourhoods in Dhaka have that one spot where people gather to just sit back and relax. For Mirpur, it’s the frequently discussed street referred to as “Love Road”.

5h ago