ভেঙে গেছে ঘর, আশ্রয় পাওয়া ৭ পরিবার আবার আশ্রয়হীন

গত জানুয়ারি মাসে বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের ৫৫টি ভূমিহীন পরিবার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঘর পেয়েছিল। বসবাস শুরু করার চার-পাঁচ মাসেই ঘর বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এখানকার সাতটি পরিবার আবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তাদের কারও ঘরের দেয়াল ধসে গেছে, দেবে গেছে ঘরের মেঝে। আরও কিছু ঘরের দেয়ালে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় ফাটল।
ছবি: সংগৃহীত

গত জানুয়ারি মাসে বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের ৫৫টি ভূমিহীন পরিবার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঘর পেয়েছিল। বসবাস শুরু করার চার-পাঁচ মাসেই ঘর বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এখানকার সাতটি পরিবার আবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তাদের কারও ঘরের দেয়াল ধসে গেছে, দেবে গেছে ঘরের মেঝে। আরও কিছু ঘরের দেয়ালে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় ফাটল।

এই সাতটি ঘর ভেঙে পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করেছে সদর উপজেলা প্রশাসন। দেয়ালে বড় ফাটল তৈরি হয়েছে আরও চার-পাঁচটি ঘরে। ছোট ফাটল দেখা যায় অন্তত ১০টি ঘরে। ফলে যতক্ষণ ঘরে থাকা হয় দুর্ঘটনার আশঙ্কা পিছু ছাড়ে না বাসিন্দাদের।

ছবি: সংগৃহীত

ঘর পেয়েছিলেন বগুড়া সদর উপজেলার ভূমিহীন শিরীন আক্তার (৩৮)। বোন সাহিদা বেগমকে নিয়ে তিনি ঘরে উঠেছিলেন। কিছুদিন আগে তাদের ঘর মাটিতে দেবে গেছে। তার বোন এখন ঘর ছেড়ে দিয়েছেন।

শিরীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমার কোনো ঘর নাই। চার মাস আগে এখানে উঠেছিলাম। বৃষ্টির পানিতে ঘর দেবে গেছে। দেয়ালে বড় ফাটল ধরেছে। কিছুদিন আগে দেওয়াল ভেঙে আমার বোনের ওপর পড়ার উপক্রম হয়েছিল। সরকারের কাছে অনুরোধ, ঘর যখন দিয়েছেন থাকতেও পারি যেন।

শিরীন জানান, তার বোন সাহিদাও এখানে ঘর পেয়েছিল। কিন্তু ঘর ভেঙে পড়ায় এক মাস থেকেছে উন্মুক্ত বারান্দায়। বৃষ্টিতে থাকতে না পেরে বগুড়া শহরে একটি বাড়িতে কাজ নিয়ে সে চলে গেছে।

না প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘর পাওয়া আরেক নারী বলেন, 'দুই মাস ভালোই ছিলাম। বৃষ্টি বাড়ার পর ঘরগুলোর দেয়াল ফাটতে শুরু করেছে। কোন কোন ঘরের দেয়াল ফেটে ভেঙে পড়ছে। ভয়ে দিন কাটছে আমাদের।'

ছবি: সংগৃহীত

'আগে অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকতাম। ঘর পেয়ে মনে হয়েছিল আর ভাড়া থাকতে হবে না। কিন্তু এখন তো আবার সেই আগের মতোই অবস্থা হতে যাচ্ছে। স্বামী রিকশা চালায়। লকডাউনের কারণে এখন তেমন আয় নেই। আবার ভাড়া বাড়িতে উঠলে বাড়ি ভাড়া দিব কেমনে? তাই ভয় নিয়েও বাধ্য হয়ে এখানে বাস করছি।'

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘরগুলো তৈরিতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ছয় মাস না যেতেই এমন বেহাল দশা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ৫৫টি ঘরের প্রতিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

এই বিষয়ে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রকৌশলীদের মতে মাটির ধারণ ক্ষমতা কম থাকার কারণে ঘরগুলো দেবে যাচ্ছে, দেয়ালে ফাটল ধরছে। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় সাতটি বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। আর বাকি যে ১০-১২টি ঘরে ফাটল ধরেছে সেগুলোও আমরা মেরামত করে দিচ্ছি।

এই সাতটি পরিবার কোথায় গেছে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, তারা আগে যেখানে থাকত সেখানেই মানে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি চলে গেছে। ঘর নির্মাণ এবং সংস্কার হয়ে গেলে দ্রুতই আমরা আবার তাদের এখানে ফিরিয়ে নিয়ে আসব।

ঘর নির্মাণে কোনো ত্রুটি বা অনিয়ম হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Where should I invest my money?

Amid persistently higher inflation in Bangladesh for more than a year, the low- and middle-income groups are struggling to meet their daily expenses.

12h ago