মাইলেজের দাবিতে কর্মবিরতির হুমকি রেল কর্মীদের
মাইলেজের দাবিতে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগ।
বুধবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে রেলওয়ের লোকোশেডে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির চট্টগ্রাম বিভাগের আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান।
এ বিষয়ে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বৃহস্পতিবারের মধ্যে রানিং স্টাফদের মাইলেজসহ মূল বেতন দেওয়া না হলে আমরা আন্দোলনে যাব। তবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আরও একটি সভা রয়েছে। সেই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।'
ইতোমধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলপথ ব্যবস্থাপক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে সংগঠনটি।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, 'রানিং কর্মচারীদের ডিসেম্বর ২০২১ সালের নিয়মিত বেতন-বিল হিসাব বিভাগ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফলে ১৯ জানুয়ারি তাদের বেতন পরিশোধ হয়নি। এ কারণে রানিং স্টাফরা আউট স্টেশনে ব্যয়ভার বহনে সংকটের মুখে পড়েছেন। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার স্বার্থে ২০ জানুয়ারির মধ্যে নিয়মিত বেতন-বিল পরিশোধের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইল। অন্যথায় রানিং কর্মচারীদের পক্ষে স্বাভাবিক ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।'
রেলওয়ে থেকে জানা গেছে, রেলের পরিবহন বিভাগের রানিং স্টাফদের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে লোকো মাস্টার (এলএম), সহকারী লোকোমাস্টার (এএলএম), সাব-লোকোমাস্টার বা সান্টিং লোকোমাস্টার (এসএলএম), ক্যারেজ অ্যাটেনডেন্ট, গার্ড, টিকিট ট্রেকার (টিটি)। একজন রানিং স্টাফ তার নিয়োগপ্রাপ্ত এলাকায় প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা এবং নিয়োগপ্রাপ্ত এলাকার বাইরে সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজ করার নিয়ম রয়েছে। তবে রেলের স্বার্থে কোনো রানিং স্টাফকে কাজে যুক্ত করা হলে বোনাস মাইলেজ সুবিধায় দেওয়ারও নিয়ম আছে।
রেলওয়েতে তীব্র লোকবল সংকট থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে রানিং স্টাফদের বিশ্রামকালীন সময়েও কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু রানিং স্টাফরা এভাবে বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে কাজ করে প্রতি মাসেই বিপুল পরিমাণ মাইলেজ জমা করেন তাদের অ্যাকাউন্টে। রেলওয়ে আইনে এ সুবিধাকে পার্ট অব পে হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়।
১৮৬২ সাল থেকে চলে আসা বাংলাদেশ রেলওয়ের বেতন-ভাতা প্রদান ছিল স্বতন্ত্র। করোনাকালীন জটিলতার মুখে রেলকর্মীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুরুতে আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে রেলের পরিবহন বিভাগের বিশেষ ভাতা সংযুক্তি নিয়ে বিপাকে পড়ে রেলওয়ে। পরবর্তী সময়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি রানিং স্টাফদের মাইলেজ নামক সুবিধা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা সর্বোচ্চ ৩০ কর্মদিবসের সমপরিমাণ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে আন্দোলনে নামেন রেলকর্মীরা।
Comments